বাহার-সূচনাসহ কুমিল্লায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় মাসুম মিয়া (২০) নামে এক যুবককে খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা ৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনাসহ ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (১৮ আগস্ট) রাতে নগরীর দিশাবন্দ এলাকার মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আবদুল হান্নান বাদি হয়ে সদর দক্ষিণ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর ভুঁইয়া।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাহাউদ্দিন বাহার ও তাহসীন বাহার সূচনার হুকুমে ছাত্রলীগ মাসুম মিয়াকে (২০) গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় আরও অনেকে আহত হয়।
জানা যায়, মাসুম মিয়া নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রামপুরের শাহিন মিয়ার ছেলে। গত ৪ আগস্ট কোটবাড়ি বিশ্বরোডে শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন মাসুম। প্রথমে তার পরিচয় না পাওয়ায় তাকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছিল। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাসুমের ভিডিও দেখে স্বজনরা তাকে চিনতে পারে।
মামলায় এমপি বাহার ও মেয়র সূচনা ছাড়াও কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, কুমিল্লা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আহম্মেদ নিয়াজ পাভেল, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস, কুসিকের কাউন্সিলর হাবিবুর আল আমিন সাদী, ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর সাইফুল আলম রনি (জামাই রনি), কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ, বাগিচাগাঁও এলাকার কাউসার জামান কায়েস, তালপুকুরপাড়ের সুজন দত্ত, কালিয়াজুড়ির মুরাদ মিয়া, কুসিকের কাউন্সিলর আজাদ হোসেন, কাউন্সিলার আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর ইকরামুল হক, রেইসকোর্সের আবদুল কাইয়ূম, কাউন্সিলর আবুল হাসান, সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক শিহানু, মধ্যম আশ্রাফপুরের নাজমুল ইসলাম শাওন, ছাত্রলীগ নেতা সালেহ আহম্মেদ রাসেল, অশোকতলার শাহ আলম খান, শাসনগাছার আবু হেনা, সাক্কু, ধর্মপুরের শহীদুল ইসলাম চপল, ফখরুল ইসলাম রুবেল, কাউন্সিলর গাজী গোলাম সরওয়ার শিপন, কুমিল্লার সদর দক্ষিনের শ্রীমন্তপুরের দুলাল হোসেন অপু, নেউয়ারার জাকির হোসেন, পাথুরিয়াপাড়ার প্রিতুল, শাকতলা মীর পুকুর পাড়ের রবিন, কালা মোস্তফা, অশোকতলার সাইফুল ইসলাম খোকন, শ্রীভল্লভপুরের মো. মেহেদী, পাঁচথুবির চেয়ারম্যান হাসান রাফি রাজু, শিমপুরের মনিরুজ্জামান মনির, ব্রাহ্মণপাড়ার ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান শরীফ, শিমপুরের নিতান্ত, শ্রীভল্লবপুরের আবদুল মালেক ভূঞা, মো. খাইরুল হাসান, মো. হানিফ দুলাল, ঢুলিপাড়ার রাশেদুজ্জামান রাশেদ, শাসনগাছার জালাল, দক্ষিণ বিজয়পুরের মো. জাফর আহাম্মদ শিপন, মোস্তফাপুরের মুন্সীবাড়ির মো. হাসান, মনোহরপুরের মোখলেছুর রহমান, বাগিচাগাঁওয়ের শফিকুর রহমানের ছেলে বাপ্পি, দৌলতপুরের ছায়া বিতানের জালাল (পিচ্চি জালাল), মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সোহেল, দক্ষিন চর্থার কাউসার আহমেদ খন্দকার ও আকাশ, মুন্সেফবাড়ির ফরহাদ উল্লাহ, লক্ষ্মীনগরের কবির হোসেন, দিশাবন্দের গোলাম মোস্তফা, দুলাল মিয়া, জিয়াউর রহমান, জালাল, সুজানগর চৌমুহনীর জালাল ও হানিফসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।