৫০ বছর বহু শিল্প কর অব্যাহতি পেয়েছে, আর কতকাল : অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ৫০ বছর বহু শিশুকে (শিল্প) লালন করে কর অব্যাহতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আর কতকাল শিশুদের লালন করব। সুরক্ষা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, তা না হলে প্রতিযোগিতামূলক হতে পারব না।
ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টি পারপাস হলে আয়োজিত সেমিনারে অর্থ উপদেষ্টা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আব্দুল হক প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআর সদস্য (মূসক নীতি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীরা কিছুদিন ব্যবসা করার পর বলেন আমাদের কর অব্যাহতি দিন। আমি উদাহরণ দিলাম না। আপনারা বুঝতে পারেন, ওইসব শিশু এখনও শিশুই রয়ে গেছে। শারীরিকভাবে বড় হয়ে গেছে তারপরও এখনও সুরক্ষা চাচ্ছে। এই সুরক্ষার দিন কিন্তু চলে গেছে।
কর, মূসক ফাঁকি দিলে সার্বিক অর্থনীতিতে একটা প্রভাব পড়ে উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দাতা সংস্থাগুলো ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও, কর অব্যাহতি এসব নিয়ে প্রশ্ন করছে। বিদেশের বহু জায়গায় বাংলাদেশে ট্যাক্স রেভিনিউ, সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
কর্মকর্তাদের আরও বেশি বন্ধুসুলভ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, একেবারে জোর করে আদায় করবেন। যদি অসুবিধা হয় শুনবেন। কমপ্লায়েন্স করতে একটু সহযোগিতা করবেন। বিশেষভাবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের বিষয় সরকার বিবেচনা করবে। এনবিআরের বিরুদ্ধে অনেকে অভিযোগ নিয়ে আসে। যদিও এনবিআরের অনেক সীমাবদ্ধতা ও ম্যান্ডেট আছে।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা আমার কাছে গেলেই এনবিআর নিয়ে অভিযোগ করে। আমি যখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ছিলাম, তখনও তারা অভিযোগ করতো। আমাদের এটা করতে হবে, ওটা করছে না। এনবিআরের সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের কতগুলো ম্যান্ডেট আছে। চাইলেই সব তো দিয়ে দেওয়া যাবে না। নাথিং ইজ ফ্রি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। পশ্চিমা দেশে সন্তান একটু বড় হলে বাবা-মাও টাকা পয়সা দেয় না। বিনা পয়সায় কিছুই দেয় না।
ট্যাক্স রেভিনিউ বৃদ্ধি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, নানা কারণে শুল্ক বাড়ানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। কারণ এর প্রভাব সরাসরি জনগণের ওপর পড়ে। ডব্লিউটিওর যে পরামর্শগুলো আছে সেগুলো মেনে শুল্ক বাড়ানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। আমাদের মূল উৎস হচ্ছে মূসক ও আয়কর।
মূল প্রবন্ধে মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর আমূল বদলে গেছে রাজস্ব প্রশাসনের চিত্র। রাজনৈতিক চাপমুক্ত হয়ে বড় সংস্কারের পথে হাঁটছে এনবিআর।