রম্য
বাজেটে যেসবের দাম বাড়ানো ও কমানো উচিত!
ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে। প্রতিবারের মতো এই বাজেটেও বেড়েছে বেশ কিছু জিনিসের দাম এবং কমেছেও কিছু সংখ্যক জিনিসের দাম। তো, বাজেটে যেসব জিনিসের দাম বাড়ালে ও কমালে ভালো হতো, চলুন দেখে আসি।
যেসব জিনিসের দাম বাড়ানো উচিত
মোবাইলের ক্যান্ডি ক্র্যাশ, ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস টাইপ গেমগুলোর দাম বাড়ানো উচিত, যাতে করে পোলাপান এগুলা খেলেই সারাটা দিন পার করে দিতে না পারে।
সেসব শাকসবজি দিয়ে মেয়েরা রূপচর্চা করে, সেসব শাকসবজির দাম বাড়ানো উচিত, যাতে করে খাবারের জিনিস মুখে নয়, মানুষ খাওয়ার জন্যই ব্যবহার করতে পারে!
জিপিএ ৫-এর দাম বাড়ানো উচিত, যাতে করে গণহারে কেউ এটাকে অর্জন করতে না পারে।
হিন্দি সিরিয়ালের দাম বাড়ানো উচিত। তাহলে আর ঘরে ঘরে হিন্দি সিরিয়াল দেখার সুযোগ পাবে না অনেকেই। ফলে দেশের ঝগড়াঝাঁটি কমে যাবে অনেকটাই।
পার্কের ডেটিংয়ের জন্য ফি বাড়ানো উচিত। এতে করে স্কুল ফাঁকি দিয়ে পোলাপান পার্কে বসে ডেটিং মারার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে তারা লেখাপড়ার দিকেই মনোযোগী বেশি হবে।
অনলাইন নিউজপোর্টালগুলোর নিবন্ধনে ফি আরো অধিক থেকে অধিকতর করা উচিত। এতে করে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো নিউজপোর্টাল গড়ে উঠবে না এবং আজেবাজে নিউজও খুব একটা বেশি ছড়াবে না।
বাঁশের দাম বাড়ানো উচিত, যাতে করে একজন আরেকজনকে সহজে বাঁশ দিতে না পারে!
মোবাইল ও ক্যামেরাজাতীয় যন্ত্রাংশের দাম বাড়ানো উচিত। এতে করে যা তুলি, তা-ই ফেসবুকে আপলোড করার প্রচলনটা কমে যাবে।
গাড়ি-ঘোড়া কেনার ওপর ট্যাক্স বাড়ানো উচিত, যাতে করে বড়লোকেরা তাদের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি কিনতে পারবে না। ফলে রাস্তার যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
মুখের তেলের ওপরও বাড়তি ফি ধরা যায়। এতে আর কেউ অফিসের বসকে তৈল মর্দন করার সুযোগ পাবে না। ফরমালিনের দাম বাড়ানো যায়। এতে করে ব্যবসায়ীরা পাইকারি হারে সবকিছুর সঙ্গে ফরমালিন ব্যবহার করতে পারবে না।
মিছিল-মিটিং-সমাবেশের ওপর বাড়তি ট্যাক্স ধরা যায়। ফলে যত্রতত্র রাস্তা দখল করে সমাবেশ কিংবা মাইক ব্যবহার করে কেউ মানুষের কানের বারোটা বাজাতে পারবে না।
যেসব জিনিসের দাম কমানো উচিত
পরীক্ষার পাস মার্ক কমানো উচিত, যাতে করে আর একজন ছাত্রও ফেল করতে না পারে।
লাইকের দাম কমানো উচিত, যেন ফেসবুকে সেলিব্রেটি আর নন-সেলিব্রেটি সব এককাতারে থাকতে পারে।
পোশাকশিল্পের দাম কমানো উচিত, যাতে করে বাস্তবে তো বটেই, সিনেমায়ও নায়িকারা বস্ত্র সংকটে না ভুগতে পারে।
রিকশা ভাড়া কমানো উচিত। কেননা, এটা কমালে বড়লোকদের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে মধ্যবিত্তরাও রিকশায় চড়ার সুযোগ পাবে।
রিচ ফুডের দাম কমানো উচিত, যাতে করে এগুলা খেয়ে গরিব মানুষ তাদের দেহের ওজন কিছুটা হলেও বাড়াতে পারে।
বাচ্চাদের খেলাধুলার পণ্যের দাম কমানো উচিত, যাতে করে দেশে হাজারো নতুন মুস্তাফিজ, মাশরাফি কিংবা সাকিবের মতো প্লেয়ার তৈরি হতে পারে।
হারিকেনের দাম কিছুটা হলেও কমানো উচিত, যাতে মানুষ ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়লেও সহজেই আদিম যুগে ফিরে যেতে পারে। ডিম আর আলুর দাম কমানো উচিত, যাতে করে দেশে লাখ লাখ ব্যাচেলর ভাই দুবেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে এবং তারা কখনো বুয়ার অভাব না বুঝতে পারে।