ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল ও অডিয়েন্স নেটওয়ার্কে এনটিভি অনলাইন
আধুনিক জীবনযাত্রায় ফেসবুক অনেক দিন ধরেই অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফেসবুক এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগের একটি মাধ্যম নয়, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদেরও খোঁজ মেলে এখানে। ফেসবুকের নিউজফিডে প্রতিদিন ভেসে আসে হাজারো খবরের শিরোনাম বা লিংক। এই শিরোনাম থেকে খবরটি পড়ার জন্য ক্লিক করলেই ফেসবুক থেকে বেরিয়ে চলে যেতে হয় নির্দিষ্ট কোনো ওয়েবসাইটে। আর মোবাইল ফোনের পাঠকমাত্রই জানেন, এটা কতটা সময়সাপেক্ষ! অপেক্ষার পালা যেন আর ফুরোতে চায় না। পাঠকের এই চিরাচরিত তিক্ত অভিজ্ঞতা বদলে দিতে ফেসবুক নিয়ে এসেছে ‘ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল’ নামে এক জাদুকরি চমক। এখন খবরের শিরোনাম বা লিংকে শুধু একটা ক্লিক, ব্যস! বিদ্যুৎ গতিতে ফেসবুকেই পেয়ে যাবেন খবরটি। ফেসবুকের এই নতুন ফিচারে যুক্ত হয়েছে এনটিভি অনলাইনও।
বিশ্বের বড় বড় সংবাদমাধ্যম এরই মধ্যে ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল ফিচারটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বাজফিড, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ছিল তালিকায় প্রথম। পরে আরো নামীদামি সংবাদমাধ্যমও ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট, হাফিংটন পোস্ট, দ্য ইনডিপেনডেন্ট, ইন্ডিয়া টুডের মতো জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমও পাঠকের খবর পড়ার অভিজ্ঞতাকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে।
ফেসবুক গত ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সবার জন্য উন্মুক্ত করে। প্রথম দিন থেকেই এই ফিচার চালু করে বাংলাদেশে সবার আগে এতে যুক্ত হয় এনটিভি অনলাইন। বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিগত যে উদ্ভাবন হচ্ছে, সেই প্রযুক্তির সহযাত্রী হয়ে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংবাদটি পাঠককে জানাতেই এনটিভি অনলাইনের এই প্রয়াস।
ফেসবুকের এই নতুন সংযোজন বা ফিচারটি মূলত মোবাইল ফোন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা বদলে দেওয়ার জন্যই। যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুততম সময়ে (ফেসবুক বলছে, বিদ্যুৎগতিতে) একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাঁর পছন্দসই খবরটি পড়তে পারবেন ফেসবুকে থেকেই। নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, এই ফিচারটির মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ‘তাৎক্ষণিকতা’। দেখলেন আর ক্লিক করলেন, ব্যস। তাতেই কাজ যা হওয়ার হয়ে যাবে। খবর বা কোনো কনটেন্ট লোড হওয়ার যে প্রতীক্ষা আপনাকে করতে হতো, তা একেবারেই ভুলে যাবেন আপনি।
পাঠকের জন্য ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সম্বন্ধে আরো খোলাসা করে বলা যায়, ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এক ধরনের অ্যাপও। ধরুন, আপনি মোবাইল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। এমন সময় আপনার নিউজফিডে একটি সংবাদের লিংক দেখলেন, তারপর ক্লিক করলেন। তখন সেই সংবাদের সাইটটি ধীরে ধীরে আপনার মোবাইলে লোড হবে আর তারপর আপনি পুরো সংবাদটি দেখতে পাবেন—এমনটাই তো হয়ে থাকে, তাই না! ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের জাদু সেখানেই। আগে কেমন করে কী হতো, ভুলে যান। ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলে সংযুক্ত কোনো নিউজ লিংকে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সেটি আপনার মোবাইলে চলে আসবে, কারণ এটি ১০ গুণ দ্রুত কাজ করে। আর তার থেকেও বড় কথা, এটি প্রথমত সেই সংবাদটি চোখের নিমেষে আপনার মোবাইলে এনে হাজির করে, ওই সাইটটিকে নয়।
ব্যবহারকারীরা এখন তৎক্ষণাৎ হাই-রেজল্যুশনে যেকোনো ছবি জুম করতে পারবেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকা ভিডিও দেখতে পারবেন কোনো বাধা ছাড়াই। আপনার মনেই হবে না যে এটি ইন্টারনেট থেকে লোড হয়েছে, বরং মনে হবে এটি যেন কোনো সেইভ করে রাখা ফাইল, আপনি ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গেই খুলে গেল! কোনো কনটেন্ট ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, সেটা বোঝারও সহজ উপায় আছে। যেকোনো শেয়ার করা লিংকের ডানপাশে যখন একটি বিদ্যুতের মতো (থান্ডারবোল্ট) চিহ্ন দেখতে পাবেন, বুঝে নেবেন সেটি ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলই বটে!
অডিয়েন্স নেটওয়ার্কে এনটিভি অনলাইন
ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের বিষয়টি অনেকেই মোটামুটি জানেন। প্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা ভালোভাবেই জানেন, বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্র হিসেবে ফেসবুক কতটা শক্তিশালী একটি প্ল্যাটফর্ম। সারা দুনিয়ার অজস্র মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ যেহেতু ফেসবুক, সে কারণে সেটি তো বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য পরম লোভনীয় এবং আরাধ্য স্থান হবেই। এ কারণেই সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ৩০ লাখ বিজ্ঞাপনদাতা শুধু ফেসবুকেই বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। ফেসবুক এই বিজ্ঞাপন থেকে আসা অর্থ উপার্জনের সুযোগ দিচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলোকেও।
ফেসবুক এখানেও নিয়ে এসেছে নতুন সংযোজন—ফেসবুক অডিয়েন্স নেটওয়ার্ক। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনী নেটওয়ার্ক। এনটিভি অনলাইন শুরু থেকেই এই অডিয়েন্স নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে। অডিয়েন্স নেটওয়ার্ককে আরো কার্যকর করে তুলতে সম্প্রতি ফেসবুক তাদের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের কার্যালয় সিঙ্গাপুরে একটি কর্মশালার আয়োজন করে এবং এতে অংশ নেওয়ার জন্য এনটিভি অনলাইনকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানায়। এনটিভি অনলাইনের প্রধান খন্দকার ফকরউদ্দীন আহমেদ সিঙ্গাপুরে ফেসবুকের ওই কর্মশালায় অংশ নেন এবং অডিয়েন্স নেটওয়ার্ককে আরো কার্যকরভাবে ওয়েবসাইট ও ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেলে যুক্ত করেন।