তুরস্কের বিমানবন্দরে বোমা হামলা, নিহত ৩৬
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের প্রধান বিমানবন্দর আতাতুর্কে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ১৪৭ ব্যক্তি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তিন বন্দুকধারী ও আত্মঘাতী এ হামলা চালায়।
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, তিন বন্দুকধারী ইস্তাম্বুল আতাতুর্ক বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের কাছে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় সেখানে থাকা ব্যক্তিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ বন্দুকধারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তারা আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়।
হামলার ঘটনার পরপর ইস্তাম্বুল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পুরো বিমানবন্দর ঘিরে ফেলেন। এর মধ্যেই উদ্ধারকারী অনেক অ্যাম্বুলেন্স বিমানবন্দরে পৌঁছে। এরপরও অ্যাম্বুলেন্স স্বল্পতায় আহতদের হাসপাতালে নিতে বিমানবন্দরের ট্যাক্সি বা প্রাইভেটকার ব্যবহার করা হয়।
তুরস্কের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ৫০ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, হামলায় নিহত ও আহতদের মধ্যে তুর্কিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক আছেন।
বিবিসির সাংবাদিকদের মতে, ইস্তাম্বুল আতাতুর্ক বিমানবন্দর শহরের সবচেয়ে বৃহত্তম এবং ইউরোপের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর হলেও সেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল। বিমানবন্দরে এক্স-রের মাধ্যমে গাড়ি পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও সব গাড়ি পরীক্ষা করে দেখা হতো না।
হামলার পরপরই বিমানবন্দরে সব ধরনের উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে, ইস্তাম্বুল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সব ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে মার্কিন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়ালদিরিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট এ হামলা চালিয়েছে। জানা গেছে, তুরস্কের সাম্প্রতিক বোমা হামলাগুলোর সঙ্গে আইএস বা কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জড়িত।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেন, এ হামলা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, এমন হামলা বিশ্বের যেকোনো দেশের বিমানবন্দরের ঘটতে পারত।
তুরস্কের বিমানবন্দরে হামলা ঘৃণ্য কাজ বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্কের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে তারা।
তুরস্কে বিমানবন্দরে হামলায় নিহতদের জন্য শোক জানিয়েছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার। তিনি বলেন, এই দুঃসময়ে তুরস্কের পাশে থাকবে জার্মানি।