প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করছে জঙ্গিরা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে নিজেদের শোধরানোর জন্য জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ দমনের পাশাপাশি জঙ্গি তৎপরতায় সম্পৃক্ত কিংবা সমর্থনে যারা কাজ করছে, তাদের সংশোধনের সুযোগ দিয়ে কাজ করছে।
আজ বুধবার রংপুরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১৩-এর আয়োজনে রংপুর নগরীর শীতল কমিউনিটি সেন্টারে জঙ্গিবাদবিরোধী সুধী সমাবেশ ও জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আত্মসমর্পণ শেষে হাফেজ মাসুদ রানা নামের এক জঙ্গি দেশের মানুষের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং আর কাউকে এই ভুল পথে পা না বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
এর আগে নিজের বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। এই উন্নয়ন ও শান্তি বিনষ্ট করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ও ইসলামকে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে পরিচিতি করার চেষ্টায় লিপ্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে সচেতন হয়েছে। এখন জঙ্গিরা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে, তাঁদের এখন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে। তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এই অপচেষ্টা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান। সেই সাথে আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় তাঁদের সফলতাও কামনা করেন।
জঙ্গিবাদবিরোধী সুধী সমাবেশ ও জঙ্গিদের আত্বসমর্পণ অনুষ্ঠানে র্যাব ১৩-এর অধিনায়ক কমান্ডার এ টি এম আতিকউল্লাহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক টিপু মুনশি, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ, রংপুর রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রংপুরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন র্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ।
সমাবেশের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। এরপর আত্মসমর্পণ করেন দিনাজপুর জেলার ঘোরাঘাট উপজেলার লোহারবান গ্রামের মন্দেল হোসেনের ছেলে হাফেজ মাসুদ রানা (১৮), একই উপজেলার বিন্যাগাড়ী গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে হাফিজুর রহমান (১৬) ও জয়রামপুর গ্রামের সারোয়ার হোসেনের ছেলে আক্তারুজ্জামান আক্তারুল (১৮)।
এঁদের মধ্যে হাফেজ মাসুদ ঘোড়াঘাটের রামেশ্বর দারুল হুদা ফাজিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। হাফিজুর একই উপজেলার কলাবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র এবং আক্তারুল উপজেলার নারায়ণপুর মিসবাহুল উলুম কওমি ও হাফেজিয়া মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র।
সরকারের আহ্বানে সাড়া দেওয়ায় এবং ভুল পথ থেকে সরে আসায় সরকারের পক্ষ থেকে এই তিনজনের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ করে মোট ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফিসহ বিভিন্ন মসজিদের খতিব, ঈমাম, মাদ্রাসাপ্রধান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।