উত্তর কোরিয়ার ‘শত্রুদের’ রহস্যজনক মৃত্যু!
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ভাই কিম জং নামের হত্যা রহস্যের কোনো কিনারা মিলছে না। বরং একাধিক হত্যাকাণ্ডের ধরনে মিল পাওয়া যাচ্ছে বলে দক্ষিণ কোরিয়া দাবি করেছে। নিহতরা সবাই উত্তর কোরিয়ার বিরোধী ছিল।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার একটি বিমানবন্দরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জং নাম। পরে মারা যান। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, তাঁর শরীরে উচ্চমাত্রার বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু জং নাম নয় দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, উত্তর কোরিয়ার শাসকদের বিরোধিতাকারী একাধিক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যুর পেছনে আছে উত্তর কোরিয়া। কেবল সিউল নয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো পর্যন্ত এ ব্যাপারে উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করছে।
তবে উত্তর কোরিয়া এসব দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
১৯৯৬ সালে রাশিয়ায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চিউয়ে দুক-সুন রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের এক শহর ভ্লাদিভোস্তকে নিহত হন। শহরটি উত্তর কোরিয়ার কাছাকাছি ছিল। আর সেখানে এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে দুক-সুনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘরে তাঁর পাসপোর্ট, টাকা পয়সা সবই ছিল। কিছুই লুট হয়নি!
ময়নাতদন্ত শেষে দুক-সুনের শরীরে এক ধরনের রাসায়নিক পাওয়া যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, ওই রাসায়নিক উত্তর কোরিয়াতে খুব সহজেই পাওয়া যায়। ওই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই সীমান্ত সংঘর্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা ২২ জন উত্তর কোরিয় সেনাদের হত্যা করে।
২০১১ সালে চীনের সীমান্ত এলাকা ড্যানডংয়ে নিহত হন খ্রিস্টান ধর্মযাজক প্যাট্রিক কিম (৪৬)। ড্যানডং এলাকাটিও উত্তর কোরিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি। কিমের শরীরেও বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়। একই রাসায়নিক পাওয়া যায় দুক-সুনের শরীরে। এর একদিন পরই গ্যাং হো বিন নামের অন্য এক দক্ষিণ কোরিয়ান খ্রিস্ট ধর্মযাজকের ওপর হামলা হয়। গ্যাংয়ের শরীরেরও বিষাক্ত রাসায়নিক দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে ওই যাত্রায় গ্যাং বেঁচে যান। তবে ২০১২ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।
দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি হান চুঙ রেয়োল নামে আরো ধর্মযাজককে হত্যা করে উত্তর কোরিয়া। চীনে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
১৯৯৭ সালে লি হান ইয়ং নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। তিনি ছিলেন উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় নেতা কিম ঝংয়ের স্ত্রীর ভাতিজা। শিউলের কাছে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন লি। তার প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, লিকে যখন গুলি করা হয়, তখন তিনি, ‘গোয়েন্দা. গোয়েন্দা বলে চিৎকার করছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের দাবি লি কে হত্যার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা হোয়াং জাং ইয়োপকে এক ধরনের বার্তা দেওয়া হয়। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন। ২০১০ সালে হোয়াংয়ের ওপর হামলা হয়। ওই যাত্রায় তিনি বেঁচে যান। ওই ঘটনার ছয় মাস পর তিনি মারা যান।