বিএনপির সাবেক মহাসচিব ওবায়দুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বিএনপির সাবেক মহাসচিব, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৭ সালের ২১ মার্চ ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচিতে নিয়েছে ওবায়দুর স্মৃতি সংসদ, স্মৃতি পরিষদ, স্মৃতি পাঠাগার, ফরিদপুর জেলা বিএনপি, নগরকান্দা, সালথা উপজেলা বিএনপি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল।
কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে সকাল ৯টায় কে এম ওবায়দুর রহমানের বাসভবনসংলগ্ন মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও কুরআনখানি। বাদ জোহর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিল। বিকেল ৩টায় নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে লস্করদিয়া শামা ডেইরি ফার্ম মাঠে স্মরণসভা।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শামা ওবায়েদ।
ওবায়দুর রহমান ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬২-১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৬২ সালে আইয়ুববিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ওবায়দুর। পরের বছর পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অভিযোগে পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ওবায়দুর। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ওবায়দুর রহমান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ফরিদপুর জেলা সমন্বয় ও প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে ফরিদপুরে যুব সমাজকে সংগঠিত করেন।
এপ্রিল মাসে পাকিস্তানি সৈন্যরা ফরিদপুর পুনর্দখল করলে ওবায়দুর রহমান ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের পুরুলিয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পলিটিক্যাল মোটিভেটর এবং পরে কলকাতায় আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
ওবায়দুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে (১৯৭৩) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৩-৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও তার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৭৮ সালে ওবায়দুর বিএনপিতে যোগ দেন ও ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি প্রথমে মৎস্য ও পশুপালন এবং পরে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬-১৯৮৮ সালে ওবায়দুর বিএনপির মহাসচিব ছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ওবায়দুর রহমান আমৃত্যু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৬৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ১০ বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন।