বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীদের বিক্ষোভ, ১১ দফা দাবি
বেতন বৈষম্য দূর করা, ঝুঁকিভাতা যুক্ত করা, বিমাসেবা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের নিরাপত্তাকর্মীরা। প্রায় দেড়যুগ ধরে নিরাপত্তাকর্মীরা ওই গ্যাসক্ষেত্রে কাজ করছে।
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান শেভরনের আওতাধীন। এ অবস্থার জন্য নিরাপত্তাকর্মীরা শেভরনকেই দায়ী করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটানা চার ঘণ্টাব্যাপী নিরাপত্তাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ চলে। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে প্রচণ্ড তাপদাহে তিনজন নিরাপত্তাকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের স্থানীয় সূর্যের হাসি ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তিনদিনের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে আবারও আমরণ অনশনসহ লাগাতার কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়।
নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়ন ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা। বিক্ষোভকারীরা জানায়, নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে প্রায় দেড় যুগ ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখান কাজ করছে তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, বকেয়া বার্ষিক মুনাফা আদায় পাঁচ শতাংশ, চাকরি স্থায়ীকরণ, প্রতি বছর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিকরণ, জ্বালানি খনিজক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মচারীদের ঝুঁকিভাতা সংযুক্তকরণ, শ্রমিক-কর্মচারীদের বাসস্থান ও যোগাযোগ ভাতা সংযুক্তকরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য নীতি দূরীকরণ, অনাদায়ী ছুটি নগদিকরণ, সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন ধার্যকরণ, প্রত্যেক শ্রমিক-কর্মচারীকে বিমায় সংযুক্তকরণ (চিকিৎসা, জীবনঝুঁকি পরিবার ইত্যাদি) ও বেতন বৈষম্য দূর করা।
আন্দোলনকারীরা জানায়, তারা অবহেলিত, নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে।
নিরাপত্তাকর্মী সামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং রোপন তালুকদার সাগরের পরিচালনায় বক্তব্য দেন কাজী এবাদুর রশিদ, জন্টু চরণ, নিদু দেব, রানু মোহন শর্মা, রাসেল আহমদ, জাহেদ চৌধুরী, তপু মিয়া, আলম, মুসলিম উদ্দিন, অমর আলী, আলী আমজাদ, পাপলু মিয়া, আবদুল মুতালেব, জাহেদ মিয়া, আবুল মিয়া, হাসনাত, হিবজু, সাজ্জাত হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আকবর, কবির মিয়া, রুহুল আমিন, আশুতোষ, মাজহারুল ও নিজাম, দিলু মিয়া, আনোয়ার মিয়া প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে নিরাপত্তাকর্মী ফয়ছল আহমদ, শংকর সিংহ ও নুরুন্নবী হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েন। সহকর্মীদের এমন অবস্থার জন্য শেভরনকেই দায়ী করে নিরাপত্তার্মীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় সূর্যের হাসি ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আতাউর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন ও ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ধর্মজিত সিনহাসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে ওসি আতাউর রহমান জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আর এ নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এ ব্যাপারে শেভরনের স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।