বিএনপি নেতা ওবায়দুর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
বিএনপির সাবেক মহাসচিব, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী মরহুম কে এম ওবায়দুর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওবায়দুরের মৃত্যু হয়।
কে এম ওবায়দুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কে এম ওবায়দুর রহমান স্মৃতি পরিষদ, স্মৃতি পাঠাগার, নগরকান্দা-সালথা উপজেলা বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কে এম ওবায়দুর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।
১৯৪০ সালের ৫ মে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ওবায়দুর রহমান। তিনি
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬২-১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৬২ সালে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ওবায়দুর। পরের বছর পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অভিযোগে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ওবায়দুর। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ওবায়দুর রহমান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ফরিদপুর জেলা সমন্বয় ও প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে ফরিদপুরে যুবসমাজকে সংগঠিত করেন।
একাত্তরের এপ্রিলে পাকিস্তানি সেনারা ফরিদপুর পুনর্দখল করলে ওবায়দুর রহমান ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের পুরুলিয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পলিটিক্যাল মোটিভেটর এবং পরে কলকাতায় আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
ওবায়দুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে (১৯৭৩) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৩-৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও তার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৭৮ সালে ওবায়দুর বিএনপিতে যোগ দেন ও ১৯৭৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি প্রথমে মৎস্য ও পশুপালন এবং পরে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬-১৯৮৮ সালে ওবায়দুর বিএনপির মহাসচিব ছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ওবায়দুর রহমান আমৃত্যু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৬৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ১০ বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন।