মাশরাফির দৃষ্টি কোয়ার্টার ফাইনালে
বিশ্বকাপে অপেক্ষাকৃত কঠিন গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। দুই স্বাগতিক দেশ অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ড তো আছেই, ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের অন্য দুই সঙ্গী শ্রীলঙ্কা আর ইংল্যান্ডও শক্তিশালী দল। গত বছর এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ায় আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশটিকে নিয়েও সতর্ক থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। গ্রুপের অন্য দল স্কটল্যান্ড হয়তো সবার নিচে থাকবে। এমন একটা কঠিন গ্রুপে পড়লেও লক্ষ্যের দিকে অবিচল মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ক তাকিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে।
‘এ’ গ্রুপে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া যে খুবই কঠিন হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তা ছাড়া তারুণ্য নির্ভর দল বলে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতায়ও বেশ পিছিয়ে। তবে সতীর্থদের ওপর আস্থার অভাব নেই মাশরাফির। রোববার সিডনিতে প্রাক-বিশ্বকাপ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন, শেষ আটে খেলার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছেন তাঁরা, ‘সবাই চায় আমরা যেন দ্বিতীয় রাউন্ডে (কোয়ার্টার ফাইনাল) যাই। কিন্তু কাজটা খুবই কঠিন। আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে দুটি বড় দলকেও আমাদের হারাতে হবে। আমরা এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে তেমন পরিচিত নই। কিন্তু আমরা এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
বিশ্বকাপে বড় দলকে হারানোর ক্ষমতা যে আছে, সেই প্রমাণ বেশ কয়েকবারই দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েই হারিয়ে দিয়েছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট পাকিস্তানকে। ২০০৭ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে এবং গতবার ইংল্যান্ড ‘বধ’ হয়েছিল বাংলাদেশের হাতে। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে হলে এবারও তেমন কিছু করতে হবে মাশরাফি-সাকিব-মুশফিকদের।
বড় দলগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট কাউকে হারানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশ এখন থেকেই করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট কাউকে টার্গেট করছি না। কারণ এতে আমাদের ওপর চাপ বাড়বে। আমরা একটা-একটা ম্যাচ ধরে খেলব। আর আশা করছি ভালোই করব।’
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের বয়সের গড় সবচেয়ে কম। দলের ১৫ সদস্যের মধ্যে মাত্র ছয়জনের বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। মাশরাফি, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের এটা তৃতীয় বিশ্বকাপ। গত বিশ্বকাপে খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেন। বাকি নয়জনই প্রথমবারের মতো খেলতে যাচ্ছেন ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরে। এমনকি এই নয়জনের কারোরই অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই!
তবে মাশরাফি আশাবাদী, ‘অনভিজ্ঞতা’ লক্ষ্যপূরণে বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেল ঠিকঠাক হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর ভালো সুযোগ আছে বলে মনে করেন তিনি, ‘আমাদের দলের তরুণ খেলোয়াড়রা খুবই ভালো। তারা খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। কিন্তু আশা করছি তারা ভালোই করবে। দলে মুশফিক, তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, নাসিরের মতো অভিজ্ঞরাও আছে। তারা জ্বলে উঠতে পারলে আর তরুণ খেলোয়াড়রা তাদের সহযোগিতা করলে আমাদের ভালো সুযোগ আছে।’
মাশরাফিদের যেন লক্ষ্যপূরণ হয় সেই প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপের জন্য দিন গুনছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।