নির্বাচনী রাজনীতির পরীক্ষায় আমি ব্যর্থ : কিরণ বেদি
দিল্লির নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় কিরণ বেদি বলেন, যথেষ্ট পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার পরও তিনি রাজনীতির পরীক্ষায় ব্যর্থ। হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক কলামে সাবেক এই পুলিশপ্রধান এমন মন্তব্য করেন। কলামটির কিছু অংশ দেওয়া হলো :
কিরণ বেদি লিখেছেন, ‘আমি কোনো অবস্থান বা ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের রাজনীতিতে আসিনি। বরং ৪০ বছর ধরে নিজের কর্মস্থলের শহরটির সেবার জন্য এসেছি। শহরে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমি কাজ করেছি। রাজনৈতিক অস্থিশীলতা থেকে শুরু করে রায়ট পর্যন্ত সব মুহূর্তেই দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলায় দিল্লি আক্রান্ত হতে দেখেছি। আবার সন্ত্রাসীদের ধরার জন্যও ছুটেছি। অপরাধ সংগঠন বন্ধ করতেও অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। সপ্তাহে পাঁচ দিনই ছুটেছি। চাকরিরত অবস্থায়ই সামাজিক উন্নয়নেরও কিছু কাজ করেছি। তবে এসব কাজের কোনোটিই সম্মানের জন্য কনিনি। এসব ছিল সময়ের দাবি।
দিল্লিকে সব দিতে চেয়েছিলাম। এখনো দিতে প্রস্তুত আছে। দিল্লিকে অনেক কিছু দেওয়ার মতো দক্ষতা এখনো আমার আছে মনে করেই রাজনীতিতে আসা। দিল্লিতে আমি একটি ভারসাম্যের সরকার চেয়েছি, যা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে পারে।
জেতার লক্ষ্যেই আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। আমার মধ্যে এমন কোনো ইচ্ছা ছিল না যে পরবর্তীকালে অনুশোচনা করি যে শুধু অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন করেছি।
আমি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছি এবং এর পুরো দায়ই আমার। কিন্তু আমার মনের মধ্যেকার বিশ্বাস আমি ব্যর্থ হইনি। কারণ যতটুকু সম্ভব শ্রম আমি দিয়েছি। অভিজ্ঞতার পূর্ণ ব্যবহার করেছি। তবে অবশ্যই তা যথার্থ ছিল না।
এমন প্রচেষ্টা একাকী অসম্ভব। অনেকগুলো বিষয় নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে এবং এমন প্রভাব পড়েছে। তাই এ বিষয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।
যে উদ্দেশ্যে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি তা নিয়েই এখন কাজ করতে চাই। সমাজে এখনো যত অসঙ্গতি আছে তা নিয়ে আন্দোলন চলতে থাকবে। মানুষের সব অধিকার পাওয়া উচিত। জনগণ সব অধিকারই নিশ্চিয়তা পাওয়ার অধিকার রাখে। তবে এটিও মনে রাখতে হবে জনগণকে যতই দেওয়া হবে, ততই চাহিদা সৃষ্টি হবে। এর মানে এই হলো কোনো কিছু পেতে হলে অবশ্যই কিছু দিতেও হয়। নতুন সরকারকে নারীসহ সবার অধিকারই নিশ্চিত করতে হবে।
সবশেষে নির্বাচনে আমার ওপর যাঁরা বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, তাঁদের আমি ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’