শাবিপ্রবিতে মুখোমুখি ছাত্রলীগের দুই পক্ষ, উত্তেজনা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মহড়ায় ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ও এ কমিটির প্রতিপক্ষ একটি পক্ষের নেতাকর্মীদের মহড়ায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুটি পক্ষের একটি হচ্ছে সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান, সহসভাপতি আবু সাহিদ আকঞ্জী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজের নেতৃত্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি। অন্য একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদ্স্য উত্তম কুমার দাস ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি অঞ্জন রায়।
গত বছরের ২০ নভেম্বর এ দুই পক্ষের মধ্যে হল দখল নিয়ে সংঘর্ষে এক বহিরাগত ছাত্রলীগকর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় ছাত্র রাজনীতি সাময়িক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কার্যক্রম।
আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজের নেতৃত্বে বর্তমান কমিটির সমর্থক অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ‘ইউনিভার্সিটি সেন্টারে’ অবস্থান নেন। খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ অঞ্জন ও উত্তমের সমর্থক নেতাকর্মীরা শাহ পরান হলের সামনে অবস্থান নেন এবং মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেন। এতে ক্যাম্পাসে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জালালাবাদ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
সন্ধ্যার পর প্রক্টর এমদাদুল হক ছাত্রলীগের উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে তিনি যোগ্য ছাত্রদেরই হলে স্থান দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। এরপরও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন।
এ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে বৈধ ও যোগ্য ছাত্রদের হলে স্থান দেওয়া হবে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এমদাদুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় ছুটিতে বাইরে রয়েছেন। ১০ মার্চের পরে মাননীয় উপাচার্য ক্যাম্পাসে আসার পর সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে অযোগ্যদের হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে আমরা প্রস্তুত আছি। প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সংঘর্ষ এড়াতে কাজ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘তাঁদের সমর্থক শিক্ষার্থী যারা হলে ওঠার জন্য আবেদন করেছে, এর মধ্য থেকে যোগ্যদের যেন হলে সিট দেওয়া হয়। এতে যেন কোনো পক্ষপাতিত্বের ঘটনা না ঘটে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি।’ নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্যাম্পাস থেকে যাবেন না বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘উত্তম কুমার দাস ছাত্রলীগের একজন বহিষ্কৃতকর্মী ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি। সে ছাত্রলীগের কেউ না।’ অঞ্জন-উত্তমদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হলে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররাও থাকছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা অঞ্জন রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হলে ক্যাম্পাসের নিয়মিত ছাত্ররাই থাকছে। ক্যাম্পাসে বা ক্যাম্পাসের বাইরে ছাত্রদল বা ছাত্রশিবিরের কোনো কার্যক্রমই এখন নেই। হত্যা মামলার আসামি আর অছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার কোনো অধিকার নেই, সাধারণ শিক্ষার্থীরাই এটা মেনে নেবে না।’