মস্তিস্ককে অলস করে দিচ্ছে স্মার্টফোন
স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের মস্তিস্ককে অলস করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, যেখানে আঙুলের এক ছোঁয়াতেই কাজ হয়ে যাচ্ছে সেখানে মানুষ কোনো কিছু নিয়ে আর বাড়তি মাথা ঘামাতে চাচ্ছে না।
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা নিজের বুদ্ধিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তারা স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। এতে তাঁদের নিজস্ব চিন্তাভাবনার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। সব তথ্যের জন্য তাঁরা স্মার্টফোন এবং সার্চ ইঞ্জিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু-এর মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গর্ডন পেনিকুক বলেন, ‘এমন সব তথ্য তাঁরা সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজ করেন যেগুলোর উত্তর তাদের জানা। অথবা একটু চেষ্টা করলেই মনে করতে পারবেন। কিন্তু সেটুকু চিন্তাভাবনা করার কষ্ট তাঁরা করতে চান না।’
গবেষকদের মতে, বুদ্ধিমান লোকেরা যখন কোনো সমস্যার সমাধান নিয়ে মাথা ঘামান তখন তাঁরা সমাধান নিয়ে ভাবার চেয়েও সমস্যাটাকে বিশ্লেষণ করে দেখেন। আর এর ফলে তাঁরা আগে সমস্যাটা নিয়ে চিন্তা করেন পরে সমাধান নিয়ে ভাবেন। তাই তাঁদের মাথায় অনেক ধরনের সমাধান আসে, এর মধ্যে থেকে সেরা সমাধানটা তাঁরা বেছে নেন।
৬৬০ জন লোকের ওপর তিনটি বিষয়ে গবেষণা চালান গবেষকরা। এ সময় তাঁদের বিশ্লেষণী ক্ষমতা, কথা বলার ধরন এবং গণনা করার ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। এরপর তাঁদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যাস বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।
এতে গবেষকরা দেখতে পান, যেসব অংশগ্রহণকারী স্মার্টফোন তুলনামূলক কম ব্যবহার করেন তাঁরা মাথা খাটিয়ে সমস্যার সমাধানে বেশি পারদর্শী। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা সার্চ ইঞ্জিনের কোনো সহায়তা নেননি।
গবেষকরা বলছেন, ‘সমস্যা সমাধানে স্মার্টফোনের সাহায্য নেওয়া দোষের কিছু না। কিন্তু সেই মুখাপেক্ষিতা যেন এমন আকার ধারণ না করে যে স্মার্টফোন ছাড়াও যে মানুষ একসময় স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করত সে কথা আমরা ভুলে যাই।’
তবে গবেষকরা এখনই নিশ্চিত করে বলতে চান না যে স্মার্টফোনের ব্যবহার মানুষের চিন্তাশক্তিকে কমিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে আরো গবেষণার দরকার বলে মত তাঁদের।