বাকৃবির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি
স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল হকের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রের (টিএসসি) সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য রফিকুল হক। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। পদের লোভে শিক্ষকরা আমাকে আমার ক্যাম্পাস থেকে উৎখাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সাইবার ক্রাইম করে মিথ্যা-বানোয়াট অডিও ক্লিপ তৈরি করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এসব অভিযোগের মুখে পদত্যাগ করবেন কি না সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘মিথ্যা অপবাদে পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না।’
এদিকে উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম। এই দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়সংলগ্ন প্রশাসন ভবনের করিডরে আজ মানববন্ধন করেছেন তাঁরা।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন অধ্যাপক এ কে এম জাকির হোসেন। এতে বলা হয়, ‘অতি সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নৈতিক স্খলন, স্বেচ্ছাচারিতা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। তাঁর (উপাচার্য) বিরুদ্ধে সরাসরি নৈতিক স্খলনের প্রমাণ হিসেবে কিছু আপত্তিকর স্থিরচিত্র, কথোপকথনের অডিও ক্লিপের সিডি রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম শামসুদ্দীন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মো. আফজাল হোসেন, মো. আবদুর রহমান সরকার, মো. আবুল খায়ের চৌধুরী, মো. শহীদ উল্লাহ তালুকদার, লুৎফুল হাসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা।
গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মচারীর অনৈতিক সম্পর্কের স্থিরচিত্র, কথোপকথনের অডিও ক্লিপের সিডি রয়েছে। আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি। আমাদের দাবি মেনে না নিলে আগামী রোববার থেকে লাগাতার আন্দোলন চলবে।’
এর আগে গত বুধবার গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম শতাধিক শিক্ষকের উপস্থিতিতে একটি জরুরি সাধারণ সভার আয়োজন করে। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে উপাচার্যকে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে হবে। উপাচার্য তা না করায় আজ তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এবং ক্ষমতার লোভে একটি স্বার্থান্বেষী মহল উপাচার্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে জানিয়ে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন হাওলাদার।