ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে জাবিতে আদিবাসীদের সমাবেশ
বাংলা বর্ষবরণের দিনে ক্যাম্পাসে ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ছাত্রীদের আবাসিক হল, পুরাতন কলাভবন হয়ে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
পরে একই স্থানে সমাবেশ করেন বিক্ষুব্ধরা। সমাবেশ থেকে এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করা হয়। কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস), আদিবাসী যুব পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, ব্যান্ড ‘মাদল’, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জন-উদ্যোগ’।
সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি আপনার উপাচার্য পদের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রমাণ করুন আপনার নেতৃত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নারী শিক্ষার্থী নিরাপদে থাকবে। আপনি বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন-উত্তর হয়ে থাকবেন না।’
ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয় সেন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ঘটনার প্রায় ২০ দিন পার হলেও এখনো বিচার সম্পন্ন না করে বরং এটাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অতি দ্রুত এ ঘটনার বিচার না করা হলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি জেমসন আমলাই বম বলেন, ‘সব জায়গায় আজ আদিবাসীরা নির্যাতিত হচ্ছে। এটা বর্তমানে পাহাড় থেকে সমতলের বিশ্ববিদ্যালয়েও চলে এসেছে। আগের নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়াতেই এমনটা হচ্ছে।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, ছাত্র ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি তন্ময় ধর, সাধারণ সম্পাদক দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বিচার আজকে গুমরে গুমরে কাঁদছে। আমরা বিচার পাচ্ছি না। তাই একত্রিত হয়ে পাল্টা-আঘাতের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে প্রক্টর ও উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৪২তম ব্যাচের এক আদিবাসী শিক্ষার্থী।
পরে গত ১৭ এপ্রিল এ অভিযোগে জড়িত সন্দেহে আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কাজ করছে।
এ ব্যাপারে জানতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে তাঁর মোবাইলে ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।