মুক্তিপণ আদায় করতেই ঝিনাইদহের মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা
এক লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করতেই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মাদ্রাসাছাত্র মিরাজুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন অপহরণ ও হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি আতাহার হোসেন শেখ ওরফে বোরহান উদ্দিন হুজুর। আজ রোববার বোরহান ও তাঁর সহযোগী হাবিবুর রহমানকে আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে দুপুরে কোটচাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গ্রেপ্তার হওয়া দুজনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হলে বোরহান শিশু মিরাজুল হত্যার বর্ণনা করেন। এ সময় এক লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য মুখে রুমাল দিয়ে মিরাজুলকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। একই সাথে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে যাতায়াত করাসহ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের এক প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করেন বোরহান।
গত ১৪ মার্চ রাতে বাড়ির কাছে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠান থেকে নিখোঁজ হয় ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের মহর আলীর ছেলে ও বুজরুখ গড়গড়ি দারুল উলুম মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মিরাজুল ইসলাম। ১৬ মার্চ সকালে ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রায় দুই মাস ধরে হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করেন পুলিশের প্রযুক্তিবিদরা। তদন্তে প্রাপ্ততথ্যের সূত্র ধরে গত শুক্রবার গভীর রাতে মাদারীপুরের খোয়াজপুরের বশার চর এলাকার একটি মসজিদ থেকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী গ্রামের বোরহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্য মতে পরদিন শনিবার ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে মিরাজুল হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে জানান, বোরহান কুমিল্লার কারিয়ানা মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করাসহ শিশু-কিশোরদের ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগে সম্ভ্রমহানি ও অপহরণ বাণিজ্যে মেতে ওঠে। মিরাজুলকে অপহরণের পর মোবাইল ফোনে তার বাবার কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং এই টাকা আদায়ের জন্যই মিরাজুলকে হত্যা করে।