নিপীড়নের বিচার দাবিতে জাবিতে মশাল মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পহেলা বৈশাখ রাতে ছাত্রী লাঞ্ছনায় জড়িত নিপীড়কদের বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। পরে একই স্থানে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, ঘটনার প্রায় এক মাস পার হতে চললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা অজুহাতে নিপীড়কদের রক্ষা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাঁরা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যতই টালবাহানা করুক, আমরা এ দেশকে দেখিয়ে দিতে চাই কীভাবে নিপীড়কদের বিতাড়ন করতে হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কার্যালয় ঘেরাও করতে যাওয়া ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করে সমাবেশে বক্তারা এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর সংগঠক ও ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিয়া ফেরদৌসী চৈতী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিপীড়কদের সাময়িক বহিষ্কারের নামে প্রহসন করেছে। আজ ২৭ দিন পার হয়েছে। আর কালক্ষেপণ করতে চাই না। জাহাঙ্গীরনগর কখনো নিপীড়কদের ছেড়ে দেয়নি, ভবিষ্যতেও ছেড়ে দেবে না।’
ছাত্রী নিপীড়নের সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে রাখার ঘোষণা দেন চৈতী। আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টায় অনির্দিষ্টকালের এ অবরোধ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয় সেন তনচঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘প্রশাসনের প্রতি ধিক্কার জানাই। আপনারা যদি এর বিচার না করতে পারেন, তাহলে গদিতে বসে আছেন কেন? গদি ছেড়ে দেন, আমরা শিক্ষার্থীরাই এর বিচার করব।’
ইংরেজি বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অলিউর রহমান সানের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তন্ময় ধর, সুদীপায়ন ভট্টাচার্য, ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুস্মিতা মরিয়ম, ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান এবং ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তুবা।
উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় পাঁচ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের এক আদিবাসী ছাত্রী। পরে যৌন নিপীড়নের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে একক ক্ষমতাবলে আট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। এ ছাড়া অভিযুক্ত পাঁচ নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।