‘ভারতের স্বার্থে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র’
ভারতের স্বার্থে প্রকৃতির ‘পবিত্র আমানত’ সুন্দরবনকে ধ্বংস করে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা।
আজ শুক্রবার বিকেলে বাগেরহাট শহরতলির খানজাহান আলী মাজার সংলগ্ন ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এক সমাবেশে এ অভিযোগ করা হয়। বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি এ সমাবেশের আয়োজন করে। প্রথমে সমাবেশের জন্য বাগেরহাট পুরাতন কোর্ট চত্বর নির্ধারণ করা হলেও পুলিশি বাধায় সেখানে সমাবেশ করতে পারেননি নেতাকর্মীরা। পরে ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সুন্দরবনকে ‘অমূল্য সম্পদ ও পবিত্র আমানত’ হিসেবে উল্লেখ করে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এই সুন্দরবন প্রকৃতির অমূল্য দান। মহাজোট সরকার জনমত, পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে সুন্দরবন, পরিবেশ ও কৃষিজমি ধ্বংসে রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প করছে। ভারতের স্বার্থে এই কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। ভারতের বুর্জোয়ারা লুণ্ঠনের জন্যই রামপাল চুক্তি করেছে।
তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘একেকটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে আর সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে। সুন্দরবন না থাকলে কয়েক লাখ মানুষ একেকটা প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিহত হবে। সুন্দরবন ধ্বংস হওয়া মানে আশপাশের কয়েকটি জেলার কয়েক কোটি মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেওয়া।
ওরিয়ন গ্রুপ সুন্দরবনের আরো কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প করছে। এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু বিশ্ব ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের রক্ষাবর্ম সুন্দরবন ধ্বংস হবে না, উপকূলীয় অঞ্চলের চার কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা এবং প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে বলে সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান মহাজোট সরকার পুনরায় ক্ষমতাসীন হয়ে দেশে স্বেচ্ছাতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। বিনা বিচারে মানুষ হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। খুন-গুম স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনধারণের উপযোগী ন্যূনতম মজুরি থেকে বঞ্চিত হছে শ্রমিক। কৃষক বছরের পর বছর উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দিশেহারা।
সংগঠনের বাগেরহাট জেলা কমিটির সভাপতি রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সত্তার, তেল- গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী কল্যাণ মোস্তফা, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের জেলা শাখার সম্পাদক ডাকুয়া মনসুর আলী প্রমুখ।