বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১২ গাড়ি
প্রতিবছরই বাজারে আসে নতুন গাড়ি। রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জায়গা নিয়ে লড়াইয়ে নামে বিশ্বের নামিদামি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। আসুন জেনে নিই ২০১৪-১৫ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১২টি বিলাসবহুল গাড়ির কথা।
১. ল্যাম্বোরগিনি ভেনেনো
৪৫ লাখ ডলার বা প্রায় ৩৬ কোটি টাকা দামের এ গাড়িটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি যা আপনাকে মাত্র ২.৮ সেকেন্ডে ০ থেকে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি দেবে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২১ মাইল। যদি আপনি গাড়িটি কিনতে চান তবে আপনাকে অন্যদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়াতে হবে। কেননা প্রতিবছর মাত্র তিনটি গাড়ি বাজারে ছাড়া হয়।
২. লাইকান হাইপার স্পোর্ট
৭৫০ হর্স পাওয়ারের একটি ৬-টুইন টার্বো ইঞ্জিনসমৃদ্ধ এ গাড়িটির দাম ৩৪ লাখ ডলার বা ২৭ কোটি টাকা। দুবাইভিত্তিক কোম্পানি ডব্লিউ মোটরস প্রতিবছর সাতটি করে গাড়ি ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে। মাত্র ২.৮ সেকেন্ডে ০ থেকে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম গাড়িটি। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৫৪ মাইল।
৩. বুগাটি ভেয়রন সুপার স্পোর্টস
মাত্র আড়াই সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতিবেগ তুলতে সক্ষম এ গাড়ির দাম ২৪ লাখ ডলার বা ১৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১০ সালে যখন প্রথম এটি বাজারে আসে, তখন এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী লিগ্যাল স্ট্রিট কার। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৬৭ মাইল বেগে ছুটতে পারে এটি। তাই বুগাটি ভায়রনের সঙ্গে একটু বুঝেশুনে পাল্লায় নামা উচিত।
৪. অ্যাস্টন মার্টিন ওয়ান-৭৭
দাম এক লাখ ৮৫ হাজার ডলার বা ১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৭৫০ হর্সপাওয়ারের অ্যাস্টন মার্টিন ওয়ান-৭৭ মাত্র সাড়ে তিন সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ মাইল।
৫. পাগানি জোন্ডা সিংক রোডস্টার
বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষণীয় এই গাড়িটি মাত্র সাড়ে তিন সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৭ মাইল। এ গাড়ির দাম ১৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা; যা অ্যাস্টন মার্টিন ওয়ান ৭৭-এর সঙ্গে যৌথভাবে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
৬. জেনোভো এসটি ১
দাম ১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ২৫ কোটি টাকা। মাত্র ২.৯ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম। গাড়িটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৩৩ মাইল। বছরে এসটি-১ মডেলের মাত্র ১৫টি গাড়ি তৈরি করা হয়। এই গাড়ির জন্য রয়েছে নিজস্ব মেকানিক্যাল সেবা, যা ‘ফ্লাইং ডক্টরস’ নামে পরিচিত।
৭. ল্যাম্বোরগিনি রেভেন্টন
এটি ল্যাম্বোরগিনির অন্যতম শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল গাড়ি। মাত্র ৩.৩ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম এই গাড়ির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১১ মাইল। প্রতিবছর মাত্র ২০টি ল্যাম্বোরগিনি রেভেন্টন গাড়ি বাজারে আসে।
৮. কোয়েনিগসেগ আগেরা আর
মাত্র ২.৮ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম এই গাড়িটি কিনতে আপনাকে খরচ করতে হবে মাত্র ১৬ লাখ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো! এই সুপারকার ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৭০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম।
৯. মেব্যাক ল্যান্ডুলেট
বাজারে পাওয়া সেডানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামি এই ল্যান্ডুলেট। ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার বা ১১ কোটি টাকা মূল্যের এ গাড়ি ৫.২ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম। এটি পৃথিবীর এযাবৎকালের অন্যতম অভিজাত গাড়ি। গাড়ির ছাদটি সম্পূর্ণ গোটানো যায়, যা যাত্রীর দুই পাশকে সম্পূর্ণ খুলে দিতে পারে। মেব্যাক ল্যান্ডুলেট তৈরি করা হয় বিশ্বের বাঘা বাঘা সিইওদের কথা মাথায় রেখে। তাঁদের লাইফস্টাইলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই গাড়ি।
১০. ম্যাকলারেন পি ১
দাম মাত্র ১৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ম্যাকলারেন ঘোষণা করেছে যে মাত্র ৩৭৫ টিপি ১ গাড়ি তৈরি করবে তারা। বিলাসবহুল এই গাড়িটির হুডের নিচে রয়েছে শক্তিশালী হাইব্রিড-মডিফায়েড ৩.৮ লিটার টুইন টার্বো ইঞ্জিন। ইলেকট্রিক মোটরের সংযোগে এটি ৯০৩ হর্স পাওয়ার শক্তি উৎপন্ন করে, যা সমন্বয় করা হয় একটি সেভেন স্পিড ডুয়েল ক্লাচ প্যাডেল শিফটার দিয়ে। ২.৭ সেকেন্ডে এটি ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম আর গাড়িটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৭ মাইল।
১১.পাগানি হুয়েরা
এই ইতালিয়ান মিড ইঞ্জিনে রয়েছে একটি ছয় লিটার ভি ১২ টুইন টার্বো চার্জড ইঞ্জিন, যা ৭২০ হর্সপাওয়ার উৎপাদন করতে পারে। মাত্র তিন সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে সক্ষম এই গাড়ির সর্বোচ্চ বেগ ঘণ্টায় ২২৪ মাইল। আকর্ষণীয় গাড়িটি কিনতে হলে আপনাকে গুনতে হবে ১৩ লাখ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
১২. হেনেসে ভেনম জিটি স্পাইডার
১১ লাখ ডলার বা আট কোটি ৮০ লাখ টাকার মতো। এ গাড়িটি মাত্র ২.৫ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০ মাইল গতি তুলতে পারে। পৃথিবীর যে কোনো কনভারটেবল গাড়ির তুলনায় এটি শ্রেষ্ঠ।
তথ্যসূত্র : ফোর্বস, দ্য সুপার কার্স।