এনটিভির যুগপূর্তি : বরগুনায় বিশেষ অতিথি চা বিক্রেতা
এনটিভির একযুগ পূর্তি উপলক্ষে আজ শুক্রবার সারা দেশেই পালিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি। এরই মধ্যে অন্যরকম এক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো বরগুনায়। জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে একজন চা বিক্রেতাকে বিশেষ অতিথি করে পালিত হয়েছে এনটিভির যুগপূর্তি অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনেই ছোট্ট একটি চায়ের দোকানে চা বিক্রি করেন খায়রুল ইসলাম আনিস। এই চা বিক্রি করেই পাঁচ বছর ধরে বাবা-মা আর ছোট ছোট ভাইবোন নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এরই মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন একাগ্রতার সঙ্গে। চায়ের দোকানের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা বিষয় নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন খায়রুল। কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন বিএডও। এখন তাঁর পড়াশোনা চলছে মাস্টার্স অব এডুকেশন নিয়ে।
এই সংগ্রামী তরুণ খায়রুল ইসলাম আনিসসহ বরগুনার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যাঙ্গনের ছয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে অতিথি করে আজ শুক্রবার সকালে বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির যুগপূর্তির অনুষ্ঠানমালা। এর আগে সকাল ১০টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি বর্ণ্যাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে তা প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে কেক কেটে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় গুণীজন সমাবেশ।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টুর সভাপতিত্বে এনটিভির যুগপূর্তির এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক অধ্যক্ষ ও কৃতী শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, চারণ কবি ইদ্রিস আলী খান, পটুয়া মোশাররফ হোসেন কনু, সমাজকর্মী সুখরঞ্জন শীল এবং ঢাকার ছায়ানটের তরুণ শিক্ষক বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি। যুগপূর্তির অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলার শিল্প, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে খায়রুল ইসলাম আনিস বলেন, তাঁর মতো ব্যক্তিকে এনটিভিকে তাদের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি করায় তিনি খুব আনন্দিত ও গর্বিত। এটি সামনে এগিয়ে চলতে আরো উৎসাহিত করবে।
অনুষ্ঠানে খায়রুল তাঁর সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অন্তত পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে সরকারি কোনো চাকরিতে ঢোকার চেয়ে চা বিক্রি করে খাওয়া ভালো। এ জন্য তিনি চা বিক্রির কাজ করছেন। তবে পাঁচ মাস ধরে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের বরগুনায় কার্যালয়ে চাকরি করছেন। সেখানে কাজ শেষে বিকেলে চায়ের দোকান চালান।