সমাবেশে গুলি চালালেও জবাবদিহি করতে হবে না পুলিশের
গত ৯ জুন বন্দি প্রত্যর্পণ বিল প্রস্তাব করার পর থেকেই হংকংয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। চলমান এই বিক্ষোভে উত্তাল পুরো হংকং। আর এই টালমাটাল অবস্থায় আন্দোলন দমানোর জন্য পুলিশের হাতে বাড়িয়ে দেওয়া হল ক্ষমতা।
গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক নথি পাঠানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সেখানে বলা হয়, চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের পুলিশকে আরো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ পুলিশের শক্তি প্রয়োগের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করে যে নীতিমালা রয়েছে, তা শিথিল করা হয়েছে।
আইনের একটি ধারা তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করলে সংশ্নিষ্ট পুলিশ সদস্যকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিধান ছিল। কিন্তু এখন এ বিধান তুলে দেওয়ায় পুলিশ কাউকে গুলি করলেও এ জন্য তাঁকে আর জবাবদিহি করতে হবে না।
গত মঙ্গলবার চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তিতে হংকংয়ে পুলিশের সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থিদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পরই পুলিশকে আরো ক্ষমতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই বিক্ষোভেই প্রথমবারের মতো গুলি চালায় পুলিশ। তাতে ১৮ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী সাং চি-কিন গুলিবিদ্ধ হয়।
পুলিশ নির্দেশিকায় পরিবর্তন করার ফলে, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করলে পুলিশ সদস্যদের জবাবদিহির আওতায় আনার যে বিধান এতদিন ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। এ বিধান ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে বলে নথিতে বলা হয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভকারী ও সরকারের মধ্যে কয়েক মাসের সহিংসতা ঠেকাতে যেকোনো ধরনের মুখোশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো ঔপনিবেশিক যুগের জরুরি ক্ষমতা প্রদর্শন করল হংকং।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে কেবিনেটের ১৬ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যারি লাম জানান, মুখোশের নিষেধাজ্ঞা বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা বন্ধের ক্ষেত্রে একটি ভিন্ন প্রভাব ফেলবে এবং পুলিশকে আইন প্রয়োগে সহায়তা করবে।
ক্যারি লাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে, হংকং জরুরি অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’
ক্যারি লাম আরো বলেন, ‘সহিংসতা হংকংকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের অবশ্যই বর্তমান ও ভবিষ্যতের হংকংকে রক্ষা করতে হবে।’
এ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের এক বছরের কারাভোগ অথবা ২৫ হাজার স্থানীয় মুদ্রা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে কেউ যদি শারীরিক অসুস্থতা, ধর্মীয় বিষয় অথবা অন্য কারণে মুখ ঢেকে রাখেন, তাহলে তাঁকে কারণ দর্শাতে হবে বলেও জানানো হয়।
প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো ঔপনিবেশিক যুগের জরুরি ক্ষমতা প্রদর্শন করল হংকং। এর ফলে হংকংয়ে সহিংসতা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এ আইনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।