প্যানিক ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলো কী?
প্যানিক ডিজঅর্ডার উদ্বেগ জনিত এক ধরনের মানসিক সমস্যা। এর লক্ষণ কী, এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আজিজুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫১৫তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : প্যানিক ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলো কী?
উত্তর : লক্ষণগুলোকে বিশ্লেষণ করলে আমরা আরো পরিষ্কার হয়ে যাব। এটা হঠাৎ করে হচ্ছে। কোনো মানুষ অফিসে বসেছিল, বস ডাকছে। বসের সামনে আজ কঠিন কিছু তাকে মোকাবিলা করতে হবে। এ রকম একটি চিন্তা হয়তো তার মাথার মধ্যে কাজ করছে। হঠাৎ করে মনে হলো, তার বুক ধড়ফড় করছে, শরীর ঘেমে যাচ্ছে, দম বোধ হয় বন্ধ হয়ে গেল। এই আমি মরে গেলাম। আমার আর বাঁচার কোনো পথ নেই। দম নিতে পারছি না, হাত-পা কাঁপছে। শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে, গলায় কী যেন আটকে গেল। বুকের ভেতর আঁটসাঁট লাগছে। হার্ট বোধ হয় বন্ধ হয়ে গেল। বমি বমি লাগছে। হাত- পা অবশ। এই বিষয়গুলো হঠাৎ করে হয়। রোগী ভাবে আমি বোধ হয়, মরেই গেলাম। আমার আর বাঁচার কোনো পথ নেই। এই শেষ আমি। এ রকম হলে, আমি বলব, এটি প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণ।
তবে যদি আমি প্যানিক ডিজঅর্ডারের কথা বলি, তাহলে আমাকে অন্যভাবে বলতে হবে। আজকে এই এপিসোডটা হলো, এটি এক মাসের মধ্যে আরেকবার হতে হবে। রোগী যদি মনে করে, আমার আবার এমন হতে পারে, এই আমি মরে যেতে পারি। এই ভয়টা যদি তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়, তাহলে আমরা তাকে প্যানিক ডিজঅর্ডার বলতে পারি। এটি তার দৈনন্দিন জীবন যাপনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যেকোনো মনোরোগ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পেশাগত দিককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
আরো একটি বিষয় হলো, প্যানিক ডিজঅর্ডার যখন নির্ণয় করব, তখন অন্য অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার থেকে একে ভিন্ন করতে হবে। অনেক সময় সোশ্যাল ফোবিয়া, বসের কাছে গেল বা সামাজিক অনুষ্ঠানে গেল, তখনো এ রকম কিছু হয়ে যেতে পারে, সেই ভয়েও কিন্তু অ্যাটাক হতে পারে। এগুলোকে আমাদের ভাগ করে নিতে হবে।