জামিনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যুবদল নেতার মৃত্যু
মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
রায়হানের বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তিনি স্ত্রী, সাত বছরের শিশু মেয়ে, তিন ভাই ও তিন বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জেলা যুবদলের সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কাজী রায়হান উদ্দিন টুকুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান বলেন, জেলার সাটুরিয়া থানায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় জামিনের প্রস্তুতি নিতে কাজী রায়হান উদ্দিন টুকুসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী আজ সকালে হাইকোর্টে যান। সেখানে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা অবস্থানকালে রায়হান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শোক প্রকাশ করে বিবৃতি
আজ এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের নীতি ও আদর্শ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে গভীরভাবে আস্থাশীল মরহুম কাজী আবু রায়হান টুকু মানিকগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি হিসেবে যুবদলকে শক্তিশালী ও সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। একজন যোগ্য সংগঠক হিসেবে স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র। তাঁর মৃত্যুতে মানিকগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের যে ক্ষতি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের নিকট অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আমি তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত ও ব্যথিত হয়েছি। মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করি তিনি যেন মরহুম কাজী আবু রায়হান টুকুকে বেহেস্ত নসিব এবং শোকাহত পরিবারবর্গকে ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দান করেন।’
বিএনপি মহাসচিব শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অপর এক শোকবার্তায় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘কাজী আবু রায়হান টুকুর মৃত্যুতে মানিকগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদল একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে হারাল। মরহুম কাজী আবু রায়হান টুকু জীবনের শেষক্ষণ পর্যন্ত দেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ভূমিকা পালন করে গেছেন। এ ছাড়া সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার কারাবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তিনি লড়াই করে গেছেন। আমরা তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক বিহ্বল পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।’