স্বাধীনতার এত বছর পরও গৃহকর্মী পাঠানো লজ্জার : রাষ্ট্রদূত
স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও কেন সৌদি আরবে গৃহকর্মী পাঠাতে হবে, এমন প্রশ্ন রেখেছেন খোদ সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েরা এখানে গৃহকর্মীর কাজ করে, এটা আমাদের দেশের জন্য লজ্জার।’
গত শুক্রবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ‘কুমিল্লা প্রবাসী সোসাইটি’র উদ্যোগে রিয়াদ দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ও কুমিল্লার কৃতী সন্তান ড. আবুল হাসানকে দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, ‘দেশ দুর্নীতিতে ভরে গেছে, দুর্নীতি আজ চরমে। ব্যাংকগুলো খালি হয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজরা দেশে কোটি টাকার এসি গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। দুর্নীতির কারণেই দেশের অবস্থা আজ ভালো নয়। দেশের অবস্থা ভালো হলে দেশের অসহায় নারীদের সৌদি আরবে খাদ্দামার (গৃহকর্মী) কাজ করতে হতো না।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এখানে গৃহকর্মীদের হাজারো সমস্যা। এ সমস্যা আমার স্টাফদের মোকাবিলা করতে হয়। রিয়াদে সেফ হোমে মান-ইজ্জতের সঙ্গে প্রায় পাঁচশ গৃহকর্মীকে আশ্রয় দিয়েছি। তাদের থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসাসেবা দিতে আমাদের কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
গোলাম মসীহ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে নেপাল পার্লামেন্টের নয় সদস্যের একটি দল আমাদের কাছে এসেছে সৌদি আরবে গৃহকর্মী পাঠাবে কিনা এ পরামর্শ নিতে। নেপালের মতো দেশ সৌদি আরবে গৃহকর্মী পাঠাবে কিনা ভেবে দেখছে, অথচ আমাদের দেশের মেয়েরা এখানে গৃহকর্মীর কাজ করে, এটা আমাদের দেশের জন্য লজ্জার।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা প্রবাসী সোসাইটির সভাপতি আলহাজ নূরুল ইসলাম। এইচ এম আলমগীর হোসেন ও আরিফুর রহমান টিটুর যৌথ সঞ্চালনায় প্রথমে কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সাংবাদিক রুস্তম খান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ সিদ্দীকী, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির হোসেন, কুমিল্লা প্রবাসী সোসাইটির উপদেষ্টা সাংবাদিক মোহাম্মদ আবুল বশির, জামরুল ইসলাম, নূরুল আমিন, রেজাউল করিম, শেখ জামাল, নন্দলাল সরকারসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে ফুল ও ক্রেস্ট তুলে দিয়ে বিদায়ী অতিথিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।