লিবিয়ায় নৌকাডুবিতে আরো ১৮ বাংলাদেশি নিখোঁজ
লিবিয়ার উপকূলে কয়েক শ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ছয় বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরো ১৮ বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিউনিশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের লিবিয়া দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি এনটিভিকে জানান, যে দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে এতে ৭৮ জন বাংলাদেশি ছিল বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৫৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিহত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন রমজান আলী, সানোয়ারা খাতুন, ইউসুফ, রিমা আবদুল আজিম, রাইসা আবদুল আজিম ও আবুল বাশার।
এদিকে অভিবাসী মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।
মোজাম্মেল হক আরো বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি, চারটি পরিবারের ২২ জন সদস্য নৌকায় ছিল। তাদের মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন। উদ্ধার হওয়া লোকজন এ তথ্য জানিয়েছে। সেখানে একটি সেন্টারে উদ্ধার হওয়া ২৯ জন রয়েছেন।’
এসব বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুয়ারা এলাকা দিয়ে নৌকা করে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল ৫০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী। তবে নৌকার তলদেশে ফুটো থাকায়, প্রায় এক ঘণ্টা যাওয়ার পর নৌকাটি উল্টে যায়। সেখানেই ছয় বছর ও ছয় মাস বয়সী দুই শিশুর মৃত্যু হয়। তবে অন্যরা লাইফ জ্যাকেট পরে থাকায় সারা রাত ভেসে ছিল। ভোরে তাদের উদ্ধার করা হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) আশঙ্কা করছে, এতে প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভুক্তভোগী তিউনিশিয়ার অভিবাসী ও নৌকার যাত্রী মাহের আল মাশরাকি বলেন, ‘বাংলাদেশিরা ছিল ডেকের নিচে, যাত্রা শুরুর পর হঠাৎ নৌযানে পানি বাড়তে লাগল। আমরা তখন ক্যাপ্টেনকে ফেরত যেতে বলি। পরে কেউ সাঁতরে তীরে পৌঁছেছেন। অনেকে পানিতে ডুবে মারা যায়।’
এদিকে এসব মৃত্যু ঠেকাতে ইইউ নেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। এ জন্য তিনি সমন্বিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এ ছাড়া ইউরোপে প্রবেশ করা তিন লাখ ৩২ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নীতি পরিবর্তনসহ মানবিক দিক বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জশ আর্নেস্ট বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সঠিক সুযোগ-সুবিধা ও জীবনের স্থিতিশীলতা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে।’