হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে যৌথ অভিযানে টিসিবির তেল ও চিনি জব্দ, আটক ৫
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজার ও পাশের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আলীগঞ্জ বাজার থেকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ২১৬ বোতল সয়াবিন তেল ও ৭৯ বস্তা চিনি জব্দ করা হয়েছে। ব্যবসায়ী নোমান হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গুদামে গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে এসব পণ্য জব্দ করে প্রশাসন। এ সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে ব্যবসায়ী নোমান হোসেন পালিয়ে যান।
নোমান স্থানীয় লালাপুর গ্রামের বাসিন্দা। আটক ব্যক্তিরা হলেন নোমানের ছোট ভাই আমান হোসেন (৩০), চার কর্মচারী জগন্নাথপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের লিংকন রায় (৩০), নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ এলাকার সিরাজ মিয়া (৪০), একই গ্রামের আবদুল কালাম ও বটপাড়া গ্রামের আবুল কালাম (৪২)।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইনাতগঞ্জের ব্যবসায়ী স্থানীয় লালাপুর গ্রামের নোমান হোসেন অবৈধভাবে টিসিবির পণ্য সামগ্রী পাইকারি ও খুচরা কালোবাজারে বিক্রি করছেন এমন তথ্য পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী যৌথভাবে কয়েকটি গুদাম ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ টিসিবির সয়াবিন তেল ও চিনিসহ পণ্যসামগ্রী উদ্ধার করা হয়। শুধু টিসিবি পণ্যই নয়, তাঁর দোকান থেকে অবৈধ ভারতীয় সিগারেটও উদ্ধার করা হয়।
এদিকে জগন্নাথপুরের আলীগঞ্জ বাজারের গুদাম থেকে টিসিবির ১৯৬ বোতল সয়াবিন তেল ও ৭৩ বস্তা চিনি ছাড়াও ছয়টি ভিন্ন বস্তায় টিসিবির চিনি ও টিসিবির চিনির নয়টি খালি বস্তাও জব্দ করা হয়। এ ছাড়া নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ বাজারের ভেতরে থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গুদাম থেকে জব্দ করা হয় টিসিবির পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল, টিসিবির লেবেল ছাড়া চিনির তিনটি খালি কার্টন ও লেবেল ছাড়া পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল।
অভিযানে অংশ নেন নবীগঞ্জের ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান, জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত, জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার চৌধুরীসহ দুই থানার পুলিশ সদস্যরা।
এ সময় কয়েক শতাধিক ভুক্তভোগী জনসাধারণ প্রশাসনের সামনেই ইনাতগঞ্জ বাজারে উপস্থিত হয়ে ব্যবসায়ী নোমান হোসেনকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ইনাতগঞ্জ পূর্ব বাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় ব্যবসায়ী নোমান হোসেনের ভাইসহ পাঁচজনকে আটক করে প্রশাসন। পরে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ আটক ব্যক্তিদের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। অভিযানের খবর পেয়ে নোমান হোসেন পালিয়ে যান।
ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, নোমানের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জ উভয় থানায়ই মামলা করা হবে।