ব্রিটেনে লেবার পার্টির নেতৃত্বে বামপন্থী করবিন
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন বামপন্থী জেরেমি করবিন। ৬৬ বছর বয়সী জেরেমি করবিন উত্তর ইংল্যান্ডের ইজলিংটন আসনের এমপি। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কারণে বেশ জনপ্রিয়।
বিবিসি জানিয়েছে, লেবার দলের নেতা নির্বাচনে সদস্যদের মোট চার লাখ ২২ হাজার ৬৬৬ ভোট গৃহীত হয়। এর মধ্যে করবিন পান দুই লাখ ৫১ হাজার ৪১৭ ভোট, যা গৃহীত ভোটের ৫৯ শতাংশের বেশি। করবিন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এন্ডি বার্নহামের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে আছেন ইভেট কুপার যিনি ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর চতুর্থ স্থান অধিকারী লিজ ক্যান্ডাল পেয়েছেন ৪.৫ শতাংশ ভোট।
টেলিগ্রাফের খবরে জানা যায়, জেরেমি করবিন ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এমপি হলেও তিনি কখনো মন্ত্রিসভা কিংবা ছায়া মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। যুদ্ধ ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিরোধিতা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান, সাম্যবাদী আন্দোলন ও শ্রমিক অধিকারের প্রচারে যুক্ত থাকা করবিন একজন চরম বামপন্থী নেতা বলে পরিচিত। ক্যামেরন সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির বিপরীতে অবস্থান নিয়ে যাতায়াত ও জ্বালানি খাতকে সরকারীকরণের কথা বলছেন করবিন। তিনি বলেছেন, তাঁর নেতৃত্বে লেবার দল ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাজ্য পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে। অভিবাসন ও রাষ্ট্রীয় কল্যাণের বিষয়েও করবিনের নীতি বেশ উদার।
এসব কারণেই হয়তো লেবার দলের প্রভাবশালী নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, গর্ডন ব্রাউন, ডেভিড মিলিব্যান্ডসহ কয়েকজন নেতা প্রকাশ্যে করবিনের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, করবিনকে নেতা নির্বাচন করা হবে আত্মঘাতী।
অর্থনৈতিক মন্দা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার অভিযোগে ২০১০ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি ক্ষমতা হারায়। চলতি বছরের ৭ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও দলটি ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ দলের কাছে আরো ভয়াবহভাবে ধরাশায়ী হয়। পরাজয়ের দায় নিয়ে নির্বাচনের পরদিন পদত্যাগ করেন দলটির নেতা এড মিলিব্যান্ড ও উপনেতা হ্যারিয়েট হারমেন। ফলে এই দুটি পদে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ে। সেই থেকে শুরু হয় নতুন নেতা নির্বাচনের তোড়জোড়, যিনি সংসদে ক্যামেরনকে শক্তভাবে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি ২০২০ সালে দলকে ক্ষমতায় ফেরানোর নেতৃত্ব দিতে পারবেন।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, লেবার পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পরের কাজ অত সহজ হবে না। ২০১০ সালে ব্যর্থতার পর নতুন করে জনগণের কাছে বিমুখ হওয়া লেবার পার্টিকে গুছিয়ে উঠতে এক দশক লেগে যেতে পারে।