টাঙ্গাইলে শাজাহান সিরাজের জানাজা সম্পন্ন
মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজের প্রথম জানাজা আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় শামছুল হক কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।
এর আগে ঢাকা থেকে শাজাহান সিরাজের মরদেহ এলেঙ্গায় পৌঁছালে তাঁকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করে সাধারণ মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবদুল গণি মিয়া ও মা রাহিমা খাতুন। বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার বেতডোবায়। শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী রাজনীতির ‘চার খলিফা’র একজন। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরির পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ।
শাজাহান সিরাজ একজন তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে ষাটের দশকে বঙ্গের আলীগড় খ্যাত টাঙ্গাইলের করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজের ছাত্র সংসদে দুবার ভিপি নির্বাচিত হন।
পরে দক্ষ, জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ জাসদ ও বিএনপির প্রার্থী হয়ে ১৯৭৯, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পাঁচবার টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপি সরকারের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাধীনতার পর শাজাহান সিরাজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) রাজনীতিতে যুক্ত হন। পরে তিনি জাসদ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১/১১ সময়ে দুর্নীতির দায়ে শাজাহান সিরাজের জেল হয়। তিনি কালিহাতী উপজেলা সদরে কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে রাজিব সিরাজ শুভ ও এক মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বাসায় ও হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলত।
আজ বুধবার দুপুর ২টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে আরেকটি জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। তাঁকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।