জয়নাল হাজারীর বাড়িতে বোমা হামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জয়নাল হাজারীর বাড়িতে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের বোমা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।
শনিবার রাতে জয়নাল হাজারী ফেনী মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ২৫/৩০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করছে।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন এনটিভি অনলাইনকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে মুখোশ পরে কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী জয়নাল হাজারীর বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা বাড়িতে অবস্থিত মুজিব উদ্যানে ১৫ আগস্ট জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকী ও শোক দিবস পালনের জন্য আয়োজনের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে এবং ফাঁকা গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
একই কায়দায় গত শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে হামলার চেষ্টা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ও র্যাব সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
গত বুধবার জয়নাল হাজারী নিজের ফেসবুক পেজে তাঁর দুই সহযোগী আরজু ও শাখাওয়াতসহ তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
জয়নাল হাজারী বলেন, ‘যে দেশে জাতির পিতা নিহত হয়েছেন, সে দেশে আমার মৃত্যু হলেও আফসোস থাকবে না। বহু বছর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারিনি। এবার ১৫ আগস্ট ফেনীতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করব। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেই একটি মহল অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বিরোধী পক্ষের উসকানিমূলক তৎপরতার শেষ নেই, ওরা অপতৎপরতায় লিপ্ত।’
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শনিবার রাতে লিখিত অভিযোগ আবেদনটিকে মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তিনি ফেনীতে আসার পর তাঁকে বাড়িতে জায়গা দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা শনিবার বিকেলে তাঁর মরহুম ভাই কামাল হাজারীর ঘরে এসে কামাল হাজারীর স্ত্রী ও কন্যাদের লাঞ্ছিত করেছে। এ ছাড়া পূর্বনির্ধারিত মুজিব উদ্যানের মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ ও পুলিশের সঙ্গে থাকা সিন্ডিকেট ক্যাডাররা।
জয়নাল হাজারী আরো বলেন, ‘প্রশাসন চায় না আমি ফেনীতে থাকি। কারণ, আমি ফেনীতে থাকলে প্রশাসনসহ সিন্ডিকেট নেতাদের অপকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে। আমার বাড়িতে আমি থাকতে পারব না, এটা কেমন কথা। আমার বয়স অনেক হয়েছে, ফেনীতে যদি আমার মরণ হয়, এ জন্য আমি ধন্য হবো।’
জয়নাল হাজারী আরো বলেন, ‘আজ কয়েকজন নেতা শোক দিবসের সভায় বলেছেন, আমি জেলা নেতাদের না জানিয়ে কেন ফেনী এসেছি। যেহেতু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মারা গেছেন, সাধারণ সম্পাদক ৯ আগস্ট বিদেশ গেছেন, জেলা কমিটির কোনো অনুমোদন বা জমা হয়নি। তাই প্রথম সহসভাপতি কে, তাও জানি না। তাই আমি কাকে জানাব, এটার বিচার সাংবাদিক ভাইদের দিলাম।