মাস্ক পরার নিয়ম অগ্রাহ্য ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যদের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে প্রথম বিতর্কে তুমুল বাগ্যুদ্ধ হয়েছে। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড শহরে কেইস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির বিতর্ক কক্ষ বা ডিবেট হলে দর্শক সারিতে থাকা ট্রাম্পের পরিবারের অনেক সদস্য মাস্ক ব্যবহার না করে অনুষ্ঠানের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কক্ষে উপস্থিত সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেও ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অনেক সদস্যকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, মাস্ক ছাড়া ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরা বিতর্ক কক্ষে উপস্থিত হওয়ার পর সেখানে উপস্থিত ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের একজন চিকিৎসক তাঁদের মাস্ক পরতে বলার জন্য কাছে যেতে উদ্যত হন। এমনকি ওই চিকিৎসক তাঁদের মাস্কও দিতে চান। কিন্তু ওই চিকিৎসক ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যদের কাছাকাছি যাওয়ার আগেই কেউ একজন মাথা নেড়ে মাস্ক নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ ছাড়া ওই চিকিৎসক মাস্কবিহীন যতজনকে মাস্ক পরতে অনুরোধ করেন, তাঁদের কেউই মাস্ক পরতে রাজি হননি।
এ সময় জো বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেন, সিনেটর ক্রিস কুনসসহ ডেমোক্রেটিক দলের সদস্য ও অতিথিদের জন্য নির্ধারিত আসনে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কী ঘটেছে তা জানার চেষ্টা করেন।
এরপর ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ওই চিকিৎসক যখন কক্ষ ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁর কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু তিনি ওই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ সময় ডিবেট হলের একজন কর্মী ওই চিকিৎসককে বলেন, ‘এ ছাড়া আপনার আর কী-ই বা করার ছিল।’
আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে প্রথম সরাসরি বিতর্কে অংশ নিয়ে পরস্পরকে দুষলেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন।
বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংস সংঘাতের জন্য বাইডেনকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে অসম বাণিজ্যের জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করেন বাইডেন। বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প ‘পুতিনের কুকুরছানা’।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে প্রথমবারের মতো সম্মুখ বিতর্কযুদ্ধে অবতীর্ণ হন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। এ বিতর্কে সঞ্চালক ছিলেন ফক্স নিউজের সাংবাদিক ক্রিস ওয়ালেস।
বিতর্ক মঞ্চে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ, কোভিড-১৯, স্বাস্থ্য খাত, অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, বর্ণবাদ, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ, সাম্প্রতিক সহিংস সংঘাত এবং চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে তর্কে জড়ান ট্রাম্প ও বাইডেন।
বিতর্কে ট্রাম্পকে মিথ্যাবাদী ও ভাঁড় অ্যাখ্যা দিয়ে বাইডেন বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেদের স্বার্থরক্ষায় ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের গদিতে বসিয়েছেন।
অন্যদিকে, কর ফাঁকির অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প জবাব দিয়েছেন, লাখ লাখ মার্কিন ডলার আয়কর দিয়েছেন তিনি ও তাঁর কোম্পানিগুলো।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংস সংঘাতের জন্য বাইডেনকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ণবাদকে নিশ্চিহ্ন করেছেন।