মার্কিন নির্বাচনের তারিখ কি পেছানো সম্ভব?
করোনায় আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেরে উঠতে সময় নেন - তাহলে ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কি হবে? নির্বাচন কি পিছিয়ে দেওয়া যাবে? কে বা কারা এ পরিবর্তন করতে পারেন?
নির্বাচনের ঠিক ৩২ দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ট্রাম্প। ফলে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মৃত্যু কিংবা অভিষেকের আগে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে বা প্রার্থী অক্ষম হলে কী ঘটবে— এমন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট নিজে করতে পারবেন না। সেটি করতে পারেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে এ প্রস্তাবটিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে, খবর বিবিসির।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন সম্ভাবনা কম, কারণ নিম্নকক্ষ অর্থাৎ মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে ডেমোক্র্যাটদের।
নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিলে আরো অনেক কিছু ঘটতে পারে। ধরা যাক কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সদস্যরা তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দিলেন। কিন্তু মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্টের প্রশাসনের আয়ু হচ্ছে ঠিক চার বছর। তাই সংবিধান মোতাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ আপনা আপনি শেষ হয়ে যাবে ২০২১ সালের ২০শে জানুয়ারি দুপুর বেলা। তাই নির্বাচনের তারিখ পাল্টালে সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হবে।
আর তা করা যাবে তখনই, যখন দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা, বা রাজ্য পর্যায়ের আইনসভা এবং তার পর যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর তিন-চতুর্থাংশ তা অনুমোদন করবে। তাই বলা যেতে পারে, এরকম কিছু ঘটার সম্ভাবনা কম।
প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে কি হবে?
প্রেসিডেন্ট যদি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তাহলে মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন তিনি। প্রেসিডেন্ট সুস্থ হলে তিনি আবার তাঁর পদে ফেরত আসবেন।
প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমতা হস্তান্তর করার মতো সুস্থও না হন - তাহলে তাঁর মন্ত্রিসভা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁকে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ ঘোষণা করতে পারে এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট তখন প্রেসিডেন্টের ভূমিকা নিতে পারেন।
এর পর যদি ভাইস প্রেসিডেন্টও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে পড়েন, তাহলে প্রেসিডেনশিয়াল সাকসেশন এ্যাক্ট নামে আইন অনুযায়ী প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার এ দায়িত্ব নেবেন।
অবশ্য বর্তমানে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি যেহেতু একজন ডেমোক্র্যাট তাই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরকম কোনো পরিস্থিতি হলে তা আইনী লড়াইয়ের জন্ম দিতে পারে।