আমিরাতের প্রতিনিধি দলের ইসরায়েল সফর, ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিন
ঐতিহাসিক ঘটনা। এই প্রথম কোনো আরব দেশের সরকারি প্রতিনিধি দল ইসরায়েলে পা দিল। ভিসা ছাড়া যাতায়াতের চুক্তিসহ একাধিক হয়েছে ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের মধ্যে।
ইসরায়েলে এই প্রথম সরকারি সফরে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধি দল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তবে আরব আমিরাতের এই সফরের তীব্র বিরোধিতা করেছে ফিলিস্তিন। তাদের দাবি, এই সফরের মাধ্যমে আরব আমিরাত ইসরায়েলের আধিপত্যবাদ এবং দখলদারির মানসিকতাকে স্বীকৃতি দিল। সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ও আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলে পৌঁছেছে। সেই দলে আছেন আরব আমিরাতের অর্থমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন তৌক আল-মারি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওবেইদ হুমেইদ আল-তায়ের। ইসরায়েলের সঙ্গে একাধিক চুক্তি সই করেছেন তাঁরা। আরব আমিরাতের এই সফরে রয়েছেন মার্কিন কূটনীতিকরাও।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মাসখানেক আগে আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয় ইসরায়েলের। এর মধ্য দিয়ে প্রথম উপসাগরীয় অঞ্চলের কোনো আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি হয়। এবার এই প্রথম ইসরায়েলে পা রাখলেন আরব দেশের কোনো সরকারি প্রতিনিধি। যুক্তরাষ্ট্র আমিরাতের এই সফরকে স্বাগত জানিয়েছে।
ফিলিস্তিন অবশ্য আমিরাতের এই ইসরায়েল সফরের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। তাদের বক্তব্য, ইসরায়েল যেভাবে দখলাদারি চালায়, যেভাবে আধিপত্যবাদ বিস্তার করে বসে আছে, আমিরাত তাতে সায় দিল। এর আগে বাহরাইন ও আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি নিয়েও একই প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল ফিলিস্তিন। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসুফ বলেছেন, আমিরাতের এই সফর ‘লজ্জাজনক’। এর পর ইসরায়েল ফিলিস্তিনের আরো এলাকা দখলের চেষ্টা করবে। কূটনৈতিকভাবে ইসরায়েলের অবস্থান আরো শক্ত করে দেওয়া হলো। আমিরাতের সফরের কড়া নিন্দা করেছে হামাসও। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেছেন, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ইসরায়েলের জোর আরো বাড়ল। ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর ইসরায়েলের অত্যাচার এবার নতুন মাত্রা পাবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের সঙ্গে চারটি চুক্তি সই করেছে আমিরাত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ও চুক্তি হয়েছে। ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পরস্পরের মধ্যে বিনিয়োগ উদ্বুদ্ধকরণ ও সুরক্ষায় চুক্তি, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা চুক্তি, ফ্লাইট পরিবহনে চুক্তি এবং ভিসামুক্ত যাতায়াতে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
তবে আলোচনার সবচেয়ে বড় বিষয় দুদেশের মধ্যে ভিসা চুক্তি। ভিসাহীন যাতায়াতে রাজি হয়েছে দুটি দেশ। ইসরায়েলের প্রতিবেশী দেশ জর্ডান ও মিসরের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ওই দুটি দেশের মানুষও ভিসাহীন চলাচলের সুযোগ পান না। আমিরাতের সঙ্গে কেন এই চুক্তি হলো, তা নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে কূটনৈতিক মহলে।