দেশের শান্তিতে যারা খুশি নয়, পার্বত্যাঞ্চলের শান্তিতেও তারা খুশি নয় : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের শান্তি ও উন্নয়নে যারা খুশি নয়, পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি, উন্নয়ন, স্থিতিতেও তারা খুশি নয়। সে কারণে দেশের শান্তি বিনষ্টের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার শান্তি বিনষ্টেও তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং এর বহিঃপ্রকাশ আমরা মাঝেমধ্যে দেখতে পাই। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ সোমবার সকালে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর দ্য সিএইচটি মাউন্টেইন বাইক’ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। সভাপতিত্ব করেন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শফিকুল আহাম্মদ। অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মং সুই প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অং সুই প্রু, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে পূর্ববর্তী সরকার বিশেষ করে যখন বিএনপি ও এরশাদ ক্ষমতায় ছিল, প্রকৃতপক্ষে তখন শান্তিচুক্তি করা ও বাস্তবায়নের জন্য হাতও দেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তিচুক্তি করেছেন এবং সেটি বাস্তবায়নও করে চলেছেন। বহু শরণার্থী যারা এখানে অশান্তির কারণে দেশত্যাগী হয়েছিল তাদেরকে তিনি ফিরিয়ে এনেছেন। যারা ভিন্নপথে গিয়েছিল তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এটি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভবপর হয়েছে।
‘আজকে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম বদলে গেছে, বাংলাদেশের অন্য এলাকার চেয়ে পার্বত্যাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া প্রকৃতপক্ষে অনেক বেশি’ উল্লেখ করে চট্টগ্রাম ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এর কারণ এখানে সরকার অধিক মনযোগী। এর ফলে তিন পার্বত্য জেলার চিত্র বদলে গেছে। এখানে মানুষের যে উন্নয়ন হয়েছে এটি সম্ভবপর হওয়ার পেছনে রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি করা ও তার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এখানে শান্তি স্থাপন।’
মন্ত্রী বলেন, পার্বত্যাঞ্চলসহ পুরো চট্টগ্রামে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সাইক্লিং ট্যুরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাম এবং এখানকার ট্যুরিজমের সম্ভাবনা সমগ্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। সুপরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনায় দেশে পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে।
করোনাভাইরাসের কারণে যখন সমস্ত কিছু স্তব্ধপ্রায়, তখন মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে মাউন্টেইন বাইকিংয়ের আয়োজনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অপরূপ শোভায় শোভিত সাজেক ভ্যালিতে সাইক্লিং করার তৃপ্তি সাইক্লিস্ট ছাড়া অন্য কেউ বলতে পারবে না।
নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমি নিজেও সাইকেল চালিয়ে ইউনিভার্সিটি যাওয়া-আসা করতাম। সে কারণে আমি নিজেও সাইক্লিংয়ের ভক্ত, ঢাকা শহরে নানা দাবিতে ও পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সাইকেল র্যালিতে আমি নিয়মিত অংশগ্রহণ করি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আসক্তি ও মাদকের হিংস্র থাবা থেকে তরুণদের দূরে রাখতে সাইক্লিংসহ ব্যাপক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মকাণ্ড আয়োজনের বিকল্প নেই, বলেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য এ প্রতিযোগিতায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ৭২০ ফুট ওপরের সাজেক থেকে রওনা হয়ে উঁচুনিচু ২৭০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ বেয়ে ৭০০ আবেদনকারী থেকে বেছে নেওয়া ৫৫ জন সাইক্লিস্ট থানচি পৌঁছান।