দোকানপাট খোলার দাবিতে নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ
দোকানপাট খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকেরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
জানা যায়, সরকার লকডাউন ঘোষণার পরপরই গতকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করের ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেট এলাকায় আজ সকাল থেকে শত শত ব্যবসায়ী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেখানে বেশির ভাগ যানবাহন চলছে,অফিস-কারখানা-বইমেলা খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান-মার্কেট খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হোক।
বিক্ষোভকারী ব্যবসায়ীরা ‘লকডাউন মানি না’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
গাউসিয়া মার্কেটের ওড়না ব্যবসায়ী ইব্রাহিম খলিল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমদের সারা বছরের ব্যবসা হয় ঈদের আগের দুই মাসে। গত বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এবারও যদি এই সময় মার্কেট বন্ধ থাকে, তাহলে তো আমাদের পথে বসতে হবে।’
ইব্রাহিম খলিল দাবি করেন, ‘যেভাবে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প-কারখানা চালু রাখা হয়েছে, সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হোক।’
ব্যবসায়িদের দাবি, দৈনিক অন্তত চার ঘণ্টা করে হলেও দোকানপাট ও মার্কেট খোলা রাখা হোক।
আজ সোমবার ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত শপিং মলসহ অন্যান্য দোকানপাট বন্ধসহ ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে গতকাল রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনাভাইরাসজনিত (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় সরকার এ লকডাউন ঘোষণা করে।
চাঁদনী চকের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তাঁরা সারা বছর ঈদের বেচাকেনার দিকে তাকিয়ে থাকেন। এ সময়ে এসে মার্কেট বন্ধের ঘোষণা তাঁদের মাথায় আঘাতের সমান।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পেটে ভাত না থাকলে কেউ ঘরে বসে থাকবে না। সবাই পেটের তাগিদে রাস্তায় নেমে গেছে। এটি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমি চাইলেও কিছুই করতে পারব না।’
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, কেবিনেট সচিবকে ফোন করে বলেছিলাম অন্তত চার ঘণ্টা চালু রেখে ব্যবসায়ীদের বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেওয়া উচিৎ। ঈদের সময়ের বিক্রি দিয়ে সারা বছরের আয় করে থাকেন পোষাক ব্যবসায়ীরা। সরকার অনলাইনে ব্যবসার কথা বলল, কিন্তু দোকান মালিকদের কতজন অনলাইনে ব্যবসায়ী? অনলাইনে বিক্রি করতে হলেও তো দোকান খুলতে হবে। ব্যবসায়ীদের রোজার ঈদটা সারা বছরের ব্যবসা। এ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত হলে না খেয়ে মরতে হবে।’
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার রাখার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে কয়েকদিন আন্দোলন করছেন উর্দু রোড অভ্যন্তরীণ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। রোববার তাঁরা মানববন্ধন করেন। ব্যবসায়ীরা বলেন, গত বছরের লকডাউনের কারণে তাঁরা সবাই বিপুল অর্থ দেনায় জর্জরিত হয়ে আছেন। এবার লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখতে হলে তাঁদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।