শিবপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি নিয়ে অসন্তোষ
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার নবঘোষিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে জেলা কমিটি এই কমিটির অনুমোদন দিয়েছে।
সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী জানিয়েছেন, গত শনিবার শিবপুর উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক হাসিবুল আলম বুলুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউছার। সম্মেলনের শুরুতে অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। ওই সম্মেলনে সভাপতি পদে দুজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু সংঘাতের আশঙ্কায় ঢাকা থেকে কমিটি ঘোষণা হবে বলে কেন্দ্রীয় নেতারা সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শিবপুরের আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শিবপুরের সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঞা মোহন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সমর্থক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক হাসিবুল আলম বুলু এবং জহিরুল হক মোহনের সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু পদের ব্যাপারে উভয়েই আপষহীন হওয়ায় সংঘাতের আশঙ্কায় কমিটি ঘোষণা করেননি কেন্দ্রীয় নেতারা।
সম্মেলনের পরের দিন গত রোববার হাফিজ আহমেদ সরকারকে সভাপতি ও শাহিন মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা কমিটি। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জানায়, নতুন ঘোষিত কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতারা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল না। কিন্তু স্থানীয় নেতাদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ তাঁদের দিয়েই কমিটির অনুমোদন করেছে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন খান নিপুন বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী পরিবারের সব নেতা আমাকে সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে আমাকে পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’
ওই অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন সাহা বলেন, ‘বিশৃঙ্খলার কারণে সম্মেলনের দিন কমিটি ঘোষণা করা যায়নি। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় নেতাদের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে আমাদের দোষারোপের কোনো সুযোগ নেই।’