প্রতিক্রিয়া
ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধাপরাধের বিচার
২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচজন ব্লগারকে তাঁদের লেখালেখির কারণে হত্যা করা হলেও ওই মামলাগুলোর অগ্রগতি নেই। আহমেদ রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায় ও ওয়াশিকুর রহমান এবং অনন্ত বিজয় দাশ ও নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের জন্য আমরা এ পর্যন্ত কিছুই করতে পারিনি। ৩১ অক্টোবরে (২০১৫) আবারো নিষ্ঠুরতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ধর্মীয় উগ্রবাদীরা। খুন করেছে আজিজ সুপারের জাগৃতি প্রকাশনীর তরুণ প্রকাশক দীপনকে, যার বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক একজন মুক্তবুদ্ধির লেখক ও সমাজচিন্তক হিসেবে সুপরিচিত।
অন্যদিকে, ব্লগারদের মতো একই কায়দায় একই দিন হামলার শিকার হয়েছেন অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল। টুটুলের সঙ্গে আহত হয়েছেন ব্লগার তারেক রহিম ও রণদীপম বসু। গত ফেব্রুয়ারিতে অভিজিৎ নিহত হওয়ার পর ফেসবুকে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়ে টুটুল মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। উল্লেখ্য, বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের ‘অবিশ্বাসের দর্শন’সহ কয়েকটি বই বের করেছে শুদ্ধস্বর। অভিজিৎ খুনে যেমন চার/পাঁচজনের দল পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছিল, ঠিক একইভাবে এই হামলাকারীরা ছিল পাঁচজন। তারা ঢুকেই বলেছিল, ‘আমরা টুটুলকে মারতে এসেছি।’ অফিসে ঢুকে কুপিয়ে তালা মেরে চলে গেছে তারা। এসব ক্ষেত্রে নিহতদের দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করা হয়েছে। প্রত্যেককেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনার পরই ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের নামে দায় স্বীকার করা হয়েছে।
চলতি বছর (২০১৫) মে মাসে একাধিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আমরা জেনেছি, তালিকা ধরে ধরে ব্লগার খুন করা হচ্ছে। সরকারের কাছে দেওয়া কথিত ‘নাস্তিক তালিকা’ অনুযায়ী একের পর এক ব্লগারকে হত্যা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকাটি থাকলেও ব্লগারদের নিরাপত্তায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত নামে একটি সংগঠন ‘নাস্তিকদের তালিকা’ শিরোনামে ৫৬ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। এই ৫৬ জনের মধ্যে আবার ২৭ জনকে আলাদা করা হয়। জামায়াত-শিবির পরিচালিত একটি ফেসবুক গ্রুপের নাম ‘বাঁশের কেল্লা’। একই সময়ে সেখানে ৮৪ ব্লগারের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় আগের ৫৬ জনের নামও ছিল। আনজুমানে আল বাইয়্যিনাতের তালিকায় রাজীব হায়দার ওরফে শোভনের নাম ছিল। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তাঁকে হত্যা করা হয়। এরও আগে ১৪ জানুয়ারি তালিকায় নাম থাকা আরেক ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর পরে চলতি বছরের (২০১৫) ২৬ ফেব্রুয়ারি তালিকায় থাকা মার্কিনপ্রবাসী অভিজিৎ রায়কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর পর ঠিক একই কায়দায় হত্যা করা হয় মূলত ফেসবুকে লেখালেখি করা ওয়াশিকুর রহমানকে। তবে কোনো তালিকাতেই ওয়াশিকুরের নাম ছিল না। সবশেষে ১২ মে সিলেটে হত্যা করা হয় ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে। আনজুমানে আল বাইয়্যিনাতের তালিকায় তাঁর নামটি ছিল।
রাজীব হায়দারকে চাপাতির আঘাতে খুন করা হয়। ব্লগে লেখালেখির কারণে বাংলাদেশে প্রথম কোনো হত্যাকাণ্ড এটি। মুক্তমনা নামে ব্লগ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কেও এ বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি সস্ত্রীক বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে ফেরার পথে চাপাতির আঘাতে প্রাণ হারাতে হয়। তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন। অভিজিৎ রায়কে হত্যার এক মাসেরও কম সময়ের মাথায় ৩০ মার্চ ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানকে ঢাকার তেজগাঁও এলাকার একটি সড়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যা করা হয় গত ১২ মে, সিলেটে। ঢাকার বাইরে এটাই একমাত্র ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। অনন্ত বাসা থেকে বের হয়ে একটি ব্যাংকে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন। তিনি মুক্তমনা ব্লগে লিখতেন এবং সিলেট থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। গত ৭ আগস্ট দুপুরে রাজধানীতে বাড়িতে ঢুকে হত্যা করা হয় ব্লগার নীলকে।
***
২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডের পর থেকে প্রতিবাদ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে; প্রতিবাদ চলছে এখনো। দেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী কণ্ঠের বক্তৃতা শুনেছি। কিন্তু মনে গেঁথে আছে কয়েকজন তরুণ বক্তার উচ্ছ্বসিত, আবেগী কিন্তু তীব্র করুণ কণ্ঠস্বর। মনে হয়েছে এই তারুণ্য প্রতিবাদ করতে জানে; ভাঙতে জানে; গড়তেও। তরুণগোষ্ঠীর আবেগী কণ্ঠস্বর থেকে ঝরে পড়ছিল বেদনার রক্তে রাঙানো মানবতা; তারা যেন নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গে জেগে উঠেছে। মৃত্যু উপত্যকায় আরোহণে সাহসী সিসিফাস তাদের অন্তরাত্মা বিস্তৃত করে তুলেছে। আপাতদৃষ্টিতে সিসিফাসের পাথর উত্তোলনের পরিশ্রম বৃথা মনে হলেও তাঁর সংগ্রাম সত্য; দেবতার অভিশাপ মাথায় নিয়ে ঘর্মাক্ত কলেবরে স্বপ্ন দেখা মিথ্যা নয়। মনে হয়েছে, ব্লগারদের লাশ কাঁধে নিয়ে সিসিফাসের মতো এই তরুণগোষ্ঠী উপরে উঠছে। বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে তাদের। দীর্ঘ ও একঘেয়ে পথের শেষে দেবতা জিউসের করুণায় শাপমুক্ত হওয়ার বাসনা সিসিফাসের মতো এই তরুণগোষ্ঠীরও। তারা সরকারের কাছ থেকে দেবতা জিউসের মতোই করুণা প্রত্যাশা করে। প্রতিবাদে মুখর দীপ্ত হাতগুলো কাঁধে দায় নিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ নামক সম্ভাবনার নতুন স্বপ্নের রাজত্বে। যেখানে জঙ্গিবাদ নেই; নেই ধর্মীয় উগ্রবাদিতা। গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার আর নিরাপত্তা রয়েছে যেখানে। তারা দাবি জানিয়েছেন মুক্তচিন্তার দিশারি খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। জামায়াত-শিবিরসহ সব ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আইন ও বিচারের আওতায় সব খুনের ঘাতকদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তরুণ সমাজের দাবিগুলো আজ বড় বেশি সত্য হয়ে উঠেছে। কলমকে রোধ করতে চায় যারা ধারালো চাপাতি দিয়ে, তাদের রুখে দেওয়ার সাহস বর্তমান প্রজন্মের একটি নতুন অনুপ্রেরণা। এই অনুপ্রেরণার সূচনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে অবস্থানকারী জঙ্গি ও ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হামলা ও হত্যার এত হুমকি।
আসলে আজকের তরুণরা ঠিকই বুঝেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সারা বিশ্বের মিডিয়া উৎসুক হয়ে বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ, এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে আমাদের দেশ আধুনিক ও সভ্য জাতির মর্যাদায় আসীন হতে পারবে। বাঙালি হিসেবে গ্লানি মুক্তির দিন শিগগিরই আমাদের সামনে উপস্থিত হবে বলে বিশ্বের মানবতাবাদী কর্মীদেরও প্রত্যাশা। একই সঙ্গে বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে, এই বিচার প্রক্রিয়া বানচালের জন্য জামায়াত-শিবিরের নাশকতার তাণ্ডব। ছাত্র-শিবির ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা একত্র হয়েছে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য। এতদিন যাদের নেতা ও ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে কর্তৃত্ব মেনে নিয়ে আদেশ পালন করে মানুষ হত্যা করেছে; বোমা-গ্রেনেড মেরে মুক্তবুদ্ধির মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে; সেই কর্মীরা জানত না কত বড় অপরাধীদের পেছনে তারা তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিয়ে দিনের পর দিন সময় নষ্ট করছে। তাদের সেসব তথাকথিত ধর্মপ্রাণ মুসলিম নেতা এখন জেলে; ফাঁসির আসামি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সারা বিশ্ববাসীর নজরে এসেছে। অপরাধগুলো ভয়াবহ। জামায়াতি নেতারা কখনো বাংলাদেশ চায়নি; তাই মুক্তিযুদ্ধের পরও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এসব সাদা-দাঁড়ি-টুপির অপরাধী মানুষগুলো পাকিস্তান ও ইসলামের নামে বাঙালি জাতিকে চিরতরে অন্ধকারে নিক্ষেপ করতে চেয়েছিল; তারা ধর্ষণ ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা, প্ররোচনা এবং অনেক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করে একাত্তরের নয় মাস আমাদের পবিত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল। আমাদের অকুতোভয় মুক্তিসেনাদের দৃঢ়তায় তাদের সব প্রচেষ্টাই ভেস্তে যায়। দেশ স্বাধীন হয়। আর দেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে সামরিক শাসকদের সমর্থনে তার সুফল ভোগ করেছে একাত্তরের অপরাধীরা হয়েও। তাদের সন্তানরা নিজেকে শিক্ষিত করার সুযোগ পেয়েছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়েছে, তাদের সমর্থকরা স্বাধীন দেশে বিচরণ করছে। কেউ কেউ নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের মতে, এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থকদের সুস্থধারায় আসতে হবে; দায়িত্ব নিতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বোঝানোর। হরতাল, পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতা ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এসব কর্মী-সমর্থক গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদীর কবল থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছে; এখন নিজেকে গড়ে তুলতে হবে সোনার বাংলা ও জয় বাংলার প্রতিধ্বনির মধ্য দিয়ে। শিক্ষা-শান্তি-প্রগতি তাদের পাথেয় হবে। কারণ, তাদের নেতাদের পেছনের ইতিহাস ভয়ংকর।
***
ধর্মীয় উগ্রবাদী এবং জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারভিত্তিক অপতৎপরতাকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। আর দরকার বর্তমান তরুণ প্রজন্মের প্রগতিশীল উদ্দীপনা। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরে তরুণদের সেই গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনই জোরদার হয়ে উঠেছিল। কারণ, সরকারি দলের ওপর আস্থা থাকলেও স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনো সক্রিয়। ফলে ক্ষোভ উগরে দিতে মানুষ নেমে এসেছিল রাস্তায়। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মাওলানা সাঈদীসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে অভূতপূর্ব জনজাগরণ রূপ নিয়েছিল প্রতিবাদী মানুষের গণবিস্ফোরণে, যার সূচনা শাহবাগ চত্বর থেকে।
যত দিন যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি না হচ্ছে, তত দিন গণআন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃপ্ত শপথ আমজনতার এখনো আছে। আর যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থক ধর্মীয় উগ্রবাদী এবং জামায়াত-শিবিরকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাদের অপতৎপরতা বন্ধের জন্য আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন। বাংলাদেশের মাটিতে এই প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদীদের স্থান হবে না। তাদের শেকড় যত গভীরে থাকুক, বর্তমান তরুণ সমাজ তা উৎপাটন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আন্দোলন ও দাবির মুখে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হলেও সাঈদীর রায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেনি। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানোর প্রত্যাশার মতো বাংলাদেশের সকল মিডিয়া ব্লগার হত্যার বিচারে সোচ্চার হয়েছে; জনতা জেগে উঠেছে। কারণ, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ নির্মূল করতে আজকের তরুণ প্রজন্ম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর মুক্তিযুদ্ধের শেষ কথা তারা আজই শুনতে চায়। দেখতে চায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি এবং উগ্রবাদীদেরও নির্বংশের দৃষ্টান্ত। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে শেষ কথা প্রতিষ্ঠিত হতেই হবে। তরুণরাই সে দায়িত্বই পালন করছে। ব্লগার এবং তরুণ প্রকাশক হত্যার প্রতিবাদে সংঘবদ্ধ তারুণ্য আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত।
***
তবে ব্লগার হত্যাকাণ্ড এবং ৩১ অক্টোবর তরুণ প্রকাশককে কুপিয়ে হত্যা আমাদের দেশের বিচারহীনতা কিংবা বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। দেশটিতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড থামানোর জন্য সরকারের সব পর্যায়ের সক্রিয় প্রচেষ্টা একান্তই দরকার। ভীত-সন্ত্রস্ত অনেক ব্লগার এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। পর পর পাঁচজন খুন হওয়ার পরও সরকারের পক্ষ থেকে অন্যদের ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব মুক্তমনা ব্যক্তিত্ব এবং তরুণ প্রজন্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের জরুরি দায়িত্ব হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
লেখক : অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।