রিয়াদের বাংলাদেশি স্কুলে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত
যথাযোগ্য মর্যাদায় সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় কারিকুলাম অনুযায়ী পরিচালিত একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে’ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসের কর্মসূচি হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি প্রভাতে অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করে শহীদদের জন্য মোনাজাতে অংশ নেন।
পরে প্রভাত ফেরিতে অংশ নেওয়ার জন্য একদল শিক্ষক অধ্যক্ষের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসে যান এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
সন্ধ্যায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয় আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ। বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদের শ্রম কল্যাণ কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের ভাইস চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মুহাম্মদ আবদুল হাকিম, এসিস্ট্যান্ট ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার গোফরান, কালচারাল ডাইরেক্টর সফিকুল সিরাজুল হক, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন রিয়াদ প্রাদেশিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম, আওয়ামী পরিষদ সভাপতি এম আর মাহবুব, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ রিয়াদ (আওয়ামী লীগ) সভাপতি ড. রেজাউল করিম মিলন, রিয়াদ যুবলীগের সভাপতি এম এ জলিল রাজা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন রিয়াদ প্রাদেশিক কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি কৃষিবিদ শামীম আবেদীন, সহসভাপতি আবদুর রহমান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন রিয়াদ মহানগর কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ টি এম জিয়াউদ্দিনসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
সিনিয়র শিক্ষক খাদেমুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বের শুরুতেই মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাফা কবির, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নীরব সিকদার ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা জান্নাত লুবাবা।
স্বাগত বক্তব্যে অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেন দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছুটির দিনেও বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাদিবসের কর্মসূচি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও বিদ্যালয়ে স্বাগত জানান।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে মাতৃভাষার তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যারা আত্মোৎসর্গ করেছিলেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। আগামী দিনের জাতির কর্ণধার হিসেবে শিক্ষার্থীদের মহান বীর শহিদদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের অনুকরণীয় এক আদর্শ। তাঁর যোগ্য কন্যা চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে।’
তারই ধারাবাহিকতায় এবং প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় ২০২১ সালে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্কুলের নিজস্ব ভবনে হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদ বলেন, ‘আমরা গর্বিত জাতি। আমাদের আত্মত্যাগ আজ বিশ্বব্যাপী স্মরণ করা হচ্ছে। মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে ভাষা শহীদদের উদ্দেশে এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।