পর্তুগালে বৈশাখী বনভোজন, বাঙালির মিলনমেলা
বাংলার কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজে নতুন ফসলকে কেন্দ্র করে যে উৎসবের সূচনা, কালক্রমে সেটাই পরিণত হয়েছে নববর্ষবরণ উৎসবে। আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব কালক্রমে নতুন মাত্রা পেয়েছে। গ্রামীণ বা লোকজ সংস্কৃতি এখন নাগরিক সংস্কৃতি তথা সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপ নিয়েছে। ফলে আদি উৎসবের নান্দনিকতা কিছুটা ক্ষুণ্ন হলেও কিছুটা নতুন নান্দনিকতাও যোগ করেছে। নগরজীবনে বৈশাখ যে ব্যাপক উৎসবের উপলক্ষ নিয়ে আসে, গ্রামীণ জীবনে তার আমেজ ভিন্ন। তবুও পয়লা বৈশাখই আমাদের গ্রাম-শহরকে একসূত্রে বাঁধার কাজটা করেছে।
পয়লা বৈশাখ যেন নৌকা থেকে গরুর গাড়ি চড়ে শহরে এসেছে, শহর থেকে ট্রেনে চড়ে রাজধানীতে এসেছে, আর রাজধানী থেকে উড়োজাহাজে চেপে নানা দূরদেশে-প্রবাসে ছড়িয়ে পড়েছে। তারই ফলস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলা নববর্ষ-১৪২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত হলো বৈশাখী বনভোজন-২০১৫। বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পর্তুগালের আয়োজনে ১৯ এপ্রিল রোববার সারা দিন লিসবনের অদূরে মনসান্তো সেরাফিনা পার্কে অনুষ্ঠিত বনভোজনে চার শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির মিলনমেলায় পরিণত হয়।
রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় এই দিন সকাল থেকেই ছিল প্রবাসীদের সপরিবারে আগমন। বৈশাখী সাজে সেজে নারী-পুরুষ ও শিশুরা বনভোজনে অংশ নেয়। পর্তুগালের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা প্রবাসীদের উপচে পড়া ভিড়ে পরিণত হয়েছিল মহোৎসবে। বনভোজনে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল পান্তা-ইলিশ ও ডাল-ভাতের আয়োজন।
বর্ষবরণের বনভোজনে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব রানা তাসলিম উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহিন উদ্দিন, এস এম রেজাউল হক, ইউসুফ তালুকদার, বাংলাদেশ কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালেদ হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহের আহমেদ চৌধুরীসহ কমিউনিটির অন্যরা।