রম্য
‘গোলাপের তুলনায় আমরা কোন অংশে কম?’
আর তো কটা দিন গেলেই বসন্ত। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের আগমন যেন ঘটে একসঙ্গেই। প্রকৃতির থেকে প্রকৃতিপ্রেমী নারীদের বর্ণিল সাজসজ্জাই বসন্তের আগমনকে ফুটিয়ে তোলে। বসন্তের সাজে মূল উপকরণ হলো ফুল। আজ হাস্যরস সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে বসন্তের বহুল ব্যবহৃত গাদা ফুলের।
হাস্যরস : কেমন আছেন গাদা সাহেব?
গাদা : শুনুন, ওভাবে নাম বলে আমাকে ডাকবার দরকার নেই। মাঝেমধ্যে ‘গাধা’ শোনায়। যাই হোক, ভালোই আছি।
হাস্যরস : তো, ফাল্গুন তো এসেই যাচ্ছে। তো, আপনার কদর কতটা বেড়েছে?
গাদা : দেখুন, সারা বছর গোলাপের মতন আমাদের তেমন দাম না থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসটা আমাদের বেশ যত্ন নেওয়া হয়। বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস, অতঃপর ২১ ফেব্রুয়ারি। এত চাপের মধ্যে আমরা তো ঠিকমতো ফোটারই সময় পাই না।
হাস্যরস : তো, নিজেদের এমন কদর বেড়ে যাওয়ায় কেমন লাগে?
গাদা : সেলিব্রেটির মতো। কেননা, পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন সব জায়গায় আমাদের দেখানো হয়।
হাস্যরস : এসবের মধ্যে খারাপ লাগার বিষয় আছে কি?
গাদা : অনেক আছে, যেমন—গোলাপের তুলনায় আমরা কোন অংশে কম? আমাদের গায়ে কোনো কাঁটা নেই, তা ছাড়া দামেও সস্তা। তার পরও মানুষ গাদা ফুল দিয়ে কখনো প্রেম নিবেদন করে না। অথচ মৃত ব্যক্তির স্মরণে মানুষ শত শত গাদা ফুল সমর্পণ করে। তখন আবার দামাদামিও করে। অথচ প্রেমিকার জন্য পাঁচ টাকার গোলাপ ৫০ টাকায় কিনতে সংকোচ করে না।
হাস্যরস : কিন্তু এরপরও তো গায়ে হলুদ কিংবা বসন্তের উৎসবে মেয়েরা গাদা ফুলের গয়না পরে। তখন কেমন লাগে?
গাদা : এটা নিয়েও সমস্যা আছে। আগে রমণীদের কোমল গালে লেপ্টে থাকতে বেশ রোমান্টিক লাগত। তবে এখন দু-তিন স্তরের ভারি মেকআপ সেই অনুভূতি থেকে আমাদের দূরে রাখে।
হাস্যরস : আপনি আপনার ব্যস্ততা থেকে এতটুকু সময় দিলেন, সে জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
গাদা : হাস্যরসের মতো আমিও যেন আমার দেহের সৌন্দর্যে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি, এই দোয়া রাখবেন।