রম্য
ঢাকাকে ব্যাচেলর মুক্ত করবেন যেভাবে
ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দিতে অনিহা থেকেই বোঝা যায় ঢাকার অন্যতম সমস্যার নাম ‘ব্যাচেলর’। ধারণা করা হয় ঢাকায় কাক, কবি ও মানুষের চেয়ে ব্যাচেলর বেশি। আসুন আমরা ঢাকা ব্যাচেলর মুক্ত করার উপায় নিয়ে ভাবা শুরু করে দেই।
১. আলু মুক্ত ঢাকা
ব্যাচেলর দূর করার প্রধান উপায় আলু মুক্ত ঢাকা গড়া। ব্যাচেলরদের প্রধান খাবার আলু। আলু ভর্তা, আলু ভাজি, আলুর ঝোল, আলু খিচুড়ি, আলুর চপ ইত্যাদি ব্যাচেলরদের সব খাবারের শুরু ও শেষে থাকবে আলু। বুয়া আসে নাই? আলু ভর্তা-ভাত। বাজার নাই? আলু সমাধান। সবজি কেনার টাকা নাই? তাহলে আলুই চলবে। এভাবেই চলছে প্রতিটা ব্যাচেলর মেস। এই আলু যদি না থাকে ব্যাচেলর সম্প্রদায় হয় না খেয়ে মরবে নয়তো কনভার্ট হয়ে ফ্যামিলি পাতবে। সুতরাং বলা চলে, ‘আলু মুক্ত ঢাকা হলে- ব্যাচেলর যাবে রসাতলে’।
২. ডিম বিক্রি বন্ধ
ডিম বিক্রি বন্ধ করলে ব্যাচেলর রাতারাতি নাই হয়ে যাবে। তাই বলে এমন ভাববেন না যে হাস-মুরগির ডিম থেকে বুঝি ব্যাচেলর জন্ম নেয়। ব্যাচেলর সমাজ আলুর চেয়ে অনেকাংশে এই ডিমের ওপর নির্ভরশীল। কত দিন, কত মাস, কত বছর যে তারা ডিমের ওপর কাটিয়ে দেয় তার ইয়ত্তা নেই। না মানে ডিমের ওপর বসে না। ডিম খেয়ে কাটায় তারা। ডিম ভাজি, ডিম ঝোল, ডিম ভর্তাসহ আরো কত পদের ডিম রেসিপি আবিষ্কার হয় ব্যাচেলর মেসে সে হিসাব ডিম ব্যতীত আর কেউ জানে না। ঢাকায় ব্যাচেলর থেকেছে আর এক টন ডিম খায় নাই- এমন ব্যাচেলর একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ডিম বিক্রি বন্ধ হলে হয় সবাই বিয়ে টিয়ে করবে নয় দেশান্তরী হবে। সুতরাং ডিম বন্ধ তো ব্যাচেলর অন্ধ।
৩. ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া বন্ধ
এমনিতেই ব্যাচেলররা কোণঠাসা হয়ে আছে বাড়িওয়ালাদের কাছে। তার পরও কিছু অসাধু বাড়িওয়ালা উচ্চমূল্যে বাড়ি ভাড়া পেতে ব্যাচেলরদের কাছে বাড়ি ভাড়া দেয়। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়। বছর না ঘুরতেই যে ভাড়াটিয়া হয়ে বাসায় উঠেছিল সে-ই জামাই হিসেবে থাকা শুরু করে। ভাড়া তো দেয়ই না আরো খানা-পিনা, হাত খরচ দিতে হয়। এ অবস্থায় বাড়িওয়ালারা যদি ব্যাচেলর দেখলেই ‘বাড়ি ভাড়া হবে না’ বলে দরজা বন্ধ করে দেয় তাহলেই কেবল ঢাকা হবে ব্যাচেলর মুক্ত।
৪. ছারপোকার বিষ বিক্রি নিষিদ্ধ
ব্যাচেলরের গায়ে রক্ত থাক আর না থাক তার বাসার আনাচে কানাচে যে ছারপোকা থাকে তাদের গায়ে ঠিকই তাজা রক্ত পাওয়া যায়। এক মাস এই ছারপোকার বিষ বিক্রি বন্ধ থাকলে ব্যাচেলর পাওয়া যাবে না। তাদের হাড় মজ্জা হজম করে ছেড়ে দেবে ছারপোকারা। অতএব ছারপোকার বিষ বিক্রি বন্ধ রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ব্যাচেলর নির্মূল করা সম্ভব।