মিরাজের বোলিংয়ে ক্যারিবীয়দের ২৬৫ রানে থামাল বাংলাদেশ
দিনের প্রথম সেশনটা যেভাবে শুরু করেছিল তাতে বড় ইনিংসের আভাসই দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে পরের দেড় সেশনে ক্যারিবীয়দের সেই লক্ষ্য পূরণ হতে দিলেন না বাংলাদেশি বোলাররা। মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইবাদতদের বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে থামিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিড পেয়েছে ১৬২ । সুতরাং এই রানে পিছিয়ে থেকে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে সাকিব আল হাসানের দল।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে ভালো করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫৯ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। দুই করে নিয়েছেন খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন। একটি করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান।
ইনিংসের শুরু থেকেই বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিলেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে টেস্টের প্রথম দিন দাপট দেখিছেন। আজ শুক্রবার দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ ছিলেন তিনি। হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু শতকের দেখা পেলেন না। ক্যারিবীয় অধিনায়ককে সেঞ্চুরি করতে দিলেন না খালেদ আহমেদ।
আজ দিনের দ্বিতীয় সেশনে সেঞ্চুরির খুব কাছেই ছিলেন ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু ঠিক ৯৪ রানের মাথায় তাঁকে সাজঘরে পাঠিয়ে আক্ষেপে ফেলে দেন খালেদ। ২৬৮ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ৯ বাউন্ডারিতে।
অধিনায়ক ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকল না ক্যারিবীয়রা। মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইবাদতদের বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিনশ’র নিচে থামিয়েছে বাংলাদেশ।
লিড নেওয়া থেকে মাত্র ৮ রান দূরে থেকে অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ শুক্রবার দিনের শুরুতেই স্কোরবোর্ডে এই ৮ রান যোগ করে বাংলাদেশের ইনিংস টপকে যায় ক্যারিবীয়রা। শেষ পর্যন্ত ১৬২ রানের লিড নিয়ে ইনিংস শেষ করতে পেরেছে ক্যারিবীয়রা।
গতকাল বৃহস্পতিবার টেস্টের প্রথম দিন প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ১০৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ২উইকেটে স্কোর বোর্ডে ৯৫ রান নিয়ে টেস্টের প্রথম দিন শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আজ দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থামানো। সেই লক্ষ্যে কিছুটা হলেও সফল বাংলাদেশ।
স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে গতকাল ম্যাচটিতে শুরু থেকেই পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশকে। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অ্যান্টিগার আর্দ্রতায় বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য টিকে থাকাই যেন চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। এই উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থাকাই ছিল সঠিক উপায়। যেটা করে দেখিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিন্তু বাংলাদেশ সেটা করতে পারেনি। ইনিংসের শুরু থেকেই মেরে খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন সবাই। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরে যান তিন টপঅর্ডার—মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক ও নাজমুল শান্ত। তিন জনের একজনও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এরপরও উইকেটে থেকে কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দেন তামিম ইকবাল। কিন্তু তাঁর লড়াইও স্থায়ী হলো না। দলীয় ৪১ রানে তাঁকেও হারায় বাংলাদেশ। ৪ বাউন্ডারিতে ৪৩ বলে ২৯ রান করে বিদায় নেন এই বাঁহাতি।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংস মেরামত আর হয়নি। এক সাকিব আল হাসান ছাড়া সবারই ছিল উইকেটে আসা-যাওয়ার তাড়া। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড অন্তত সেটাই বলে। সাকিব ছাড়া বাকি ১০ ব্যাটারের রান যথাক্রমে—২৯, ০, ০, ০, ১২, ০, ২, ৩, ০, ৬। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন সাকিব। ৬৭ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ছয়টি বাউন্ডারি।
বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ঠিকই ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে দিন শেষে স্বস্তি নিয়েই মাঠ ছাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৯৫/২) ১১২.৫ ওভারে ২৬৫ (ব্র্যাথওয়েট ৯৫, বনার ৩৩, ব্ল্যাকউড ৬৩, মেয়ার্স ৭, ডা সিলভা ১, জোসেফ ০, রোচ ০, মোটি ২৩*, সিলস ১; মুস্তাফিজ ১৮-৭-৩০-১, খালেদ ২২-৪-৫৯-২, ইবাদত ২৮-৮-৬৫-২, সাকিব ২১-৫-৪৮-১, মিরাজ ২২.৫-৬-৫৯-৪, শান্ত ১-১-০-০)