ডেইলি মেইলকে ‘অনির্ভরযোগ্য’ বলল উইকিপিডিয়া
উইকিপিডিয়ায় কোনো বিষয় ভুক্তির ক্ষেত্রে ডেইলি মেইলের কোনো সূত্র আর গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছেন অনলাইন বিশ্বকোষ বলে পরিচিতি উইকিপিডিয়ার সম্পাদকমণ্ডলী। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ডেইলি মেইল অতিরিক্ত মাত্রায় অনির্ভরযোগ্য। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল ও এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যাবলির ওপর ‘সাধারণত নির্ভর করা যায় না’ বলেই মত সম্পাদকদের। খবরটি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট।
সম্প্রতি দেওয়া এক বিবৃতিতে উইকিপিডিয়ার ইংরেজি ভাষাবিষয়ক সম্পাদক এ সম্পর্কে বলেন, ‘তথ্য যাচাইয়ে দুর্বলতা, অতিরঞ্জন ও বানোয়াট খবরের জন্য এদের দুর্নাম রয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভোটের ফলে সাধারণভাবেই এই ট্যাবলয়েডটির যেকোনো তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
উইকিপিডিয়া ওয়েবসাইট পরিচালনাকারী অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে সাধারণ পাঠকের মধ্যে ডেইলি মেইলের ওপর ভোট গ্রহণের কথা জানায়। বিবৃতির বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান অবশ্য জানিয়েছে, উইকিপিডিয়ার অবৈতনিক সম্পাদকরা চাইলে ডেইলি মেইলকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এখন থেকে ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় ডেইলি মেইলকে আর নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হবে না। এ ছাড়া তথ্যসূত্র হিসেবে ডেইলি মেইলের বিদ্যমান সব সূত্র মুছে ফেলে নতুন নির্ভরযোগ্য সূত্র ব্যবহারের জন্য উইকিপিডিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সম্পাদকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
নিষেধাজ্ঞার খড়্গ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ট্যাবলয়েডের বিরুদ্ধেও। উইকিপিডিয়ার সম্পাদকের নির্দেশিকায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাবলয়েড দ্য ন্যাশনাল ইনকোয়ারারকে কখনো তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।
উইকিপিডিয়ার বিষয়বস্তু লেখা ও সম্পাদনা করা হয় বিশ্বাসযোগ্য ও তৃতীয় পক্ষের প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। তবে এসব তথ্যের সত্য পরীক্ষা ও যথার্থতা নির্ণয়ের জন্য উইকিপিডিয়ার যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে।
নির্দেশিকায় তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে নির্দেশ দেওয়া হয়, বিশেষ করে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া, উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি ও ইরানের প্রেস টিভির তথ্য ব্যবহারে আরো সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশিকায় সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, এসব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নির্দিষ্ট দল ও মতের দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। তবে এদের বিপক্ষে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।
উইকিপিডিয়ার এমন সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, ডেইলি মেইল ঐতিহাসিকভাবে নিরপেক্ষ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে। ডেইলি মেইলকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ করলেও উইকিপিডিয়া অন্য দুর্বল সূত্রের ওয়েবসাইটকে এখনো তথ্যসূত্রের জন্য ব্যবহার করছে।
এর আগেও যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিক্রীত দৈনিক দ্য ডেইলি মেইলের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ, অতিরঞ্জন ও বিশ্বাসহীনতার অভিযোগ ওঠে। তারপরও ডেইলি মেইল অনলাইনকে বিশ্বের বৃহৎ ইংরেজি সংবাদের ওয়েবসাইট হিসেবে ধরা হয়। এদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করেন প্রায় দুই কোটি ৪৫ লাখ গ্রাহক।