‘আইফোন’ নামে হ্যান্ডব্যাগ?
দীর্ঘ এক আইনি লড়াই শেষে হেরে গেল সিলিকন ভ্যালির টেক জায়ান্ট অ্যাপল, তাও এক অখ্যাত চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে!
চীনের এক আদালতের রায় অনুযায়ী, বেইজিং-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিনটং টিয়ান্ডি তাদের তৈরি পণ্যের ব্র্যান্ড নেম হিসেবে ‘আইফোন’ ব্যবহার করতে পারবে। তবে তারা কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও নয়। চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি মূলত ‘আইফোন’ নামের হ্যান্ডব্যাগ আর মোবাইল ফোনের কেচ তৈরি করে থাকে।
এ বিষয়ে চীনা সংবাদমাধ্যম ‘লিগ্যাল ডেইলি’র একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অ্যাপল ও এই চীনা প্রতিষ্ঠানটি সেই ২০১২ সাল থেকে অ্যাপল নামটির স্বত্ব নেওয়ার জন্য লড়াই করে আসছে।
তবে আগেই চীনের ট্রেডমার্ক অথরিটি অ্যাপলের দাবি নাকচ করে দিয়েছিল। ৩১ মার্চ অ্যাপল এ ব্যাপারে পুনরায় আপিল করার পর বিষয়টি আদালতে গড়ায়।
তবে অ্যাপলের জন্য কোনো খুশির খবর দিতে পারেনি বেইজিংয়ের মিউনিসিপাল হাই পিপলস কোর্ট। তাঁরাও তাঁদের রায়ে জানান, অ্যাপলের পাশাপাশি জিনটং টিয়ান্ডিরও পূর্ণ অধিকার রয়েছে ‘আইফোন’ নামটি ব্যবহার করার।
আসলে ঝামেলাটি তৈরি হয়েছে ট্রেডমার্ক করার সময়কাল নিয়ে। অ্যাপল ২০০২ সালে ‘আইফোন’ নামটি ট্রেডমার্ক করার জন্য আবেদন জানালেও ২০১৩ সাল পর্যন্ত ওই আবেদন গৃহীত হয়নি। পরবর্তী সময়ে অ্যাপলের আইফোনকে ‘ক্লাস ৯ : ইলেকট্রিক অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অ্যাপারাটাস’ শ্রেণিতে ট্রেডমার্ক করা হয়।
অন্যদিকে, অ্যাপলের আবেদনের পাঁচ বছর পরই অর্থাৎ ২০০৭ সালে জিনটং টিয়ান্ডি ‘আইফোন’ নামটি ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করে। ২০১০ সালে ট্রেডমার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদন মঞ্জুর করে নেয়, যেটি স্থান করে নেয় ‘ক্লাস ১৮ : লেদার গুডস’ শ্রেণিতে।
চীনের ট্রেডমার্ক কর্তৃপক্ষ কোনোমতেই জিনটং টিয়ান্ডির ট্রেডমার্ক বাতিল করতে রাজি হয়নি এবং তারা যুক্তি প্রদর্শন করে যে, জিনটং টিয়ান্ডি যখন ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করেছিল, তখন এ অঞ্চলে অ্যাপলের ‘আইফোন’-এর পরিচিতি ছিল না বললেই চলে।
অ্যাপল ২০০৯ সালে তাদের আইফোন নিয়ে চীনে প্রবেশ করে, যার অনেক আগেই জিনটং টিয়ান্ডি ‘আইফোন’ নাম ব্যবহার করে পণ্য বানানো শুরু করে দিয়েছিল।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর অ্যাপল কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য না জানা গেলেও প্রবল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে জিনটং টিয়ান্ডি। তারা তাদের ওয়েবসাইটে আদালতের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করার পর ‘আইফোন’ নাম নিয়ে অ্যাপলের সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এই আহ্বানে কী উত্তর দেয় অ্যাপল, সেটিই এখন দেখার বিষয়!