ডেস্কটপে অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যার বন্ধ করবে ফেসবুক
ফেসবুকের জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে ততই বাড়ছে বিজ্ঞাপন। কিন্তু ব্যবহারকারীরা সবসময় চান বিজ্ঞাপনমুক্ত হয়ে ফেসবুক ব্যবহার করতে। আর তাই ফেসবুক বা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন এড়িয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যার।
এতে ফেসবুকের বিজ্ঞাপনগুলো ব্যবহারকারীরা আর দেখতে পান না। তবে এতে ক্ষতি হয় ফেসবুকের। কারণ বিজ্ঞাপনই ফেসবুকের আয়ের প্রধান উৎস। আর সে কারণেই ডেস্কটপে অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যারগুলো যেন কাজ না করে সেই রকম এক প্রযুক্তি নিয়ে আসতে যাচ্ছে ফেসবুক। এ খবর জানিয়েছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক ব্যবসাবিষয়ক দৈনিক ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল।
ফেসবুকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপনগুলো লোড হওয়ার প্রক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসবে যার ফলে অ্যাড ব্লকিং সফটওয়্যারগুলো বিজ্ঞাপনগুলো চিহ্নিত করতে না পারে।
ফেসবুকের অ্যাডস ও বিজনেস প্ল্যাটফর্মের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু বসওয়ার্থ এ বিষয়ে বলেন, ‘ফেসবুক চলে বিজ্ঞাপনের পয়সায়। তাই বিজ্ঞাপন বাদ দিয়ে ফেসবুক চালানো সম্ভব নয়।’
গত কয়েক বছরে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার হার যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে ব্যবহারকারীদের অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রবণতাও। ডেস্কটপের মাধ্যমে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে অ্যাড ব্লকিং সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারঅ্যাকটিভ অ্যাডভার্টাইজিং ব্যুরোর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ডেস্কটপে অ্যাড ব্লকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করেন।
এই বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিজ্ঞাপন থেকে ফেসবুকের আয়ের ৮৪ শতাংশ এসেছে মোবাইল থেকে। ফেসবুকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডেস্কটপে অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যারগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কারণে ডেস্কটপ থেকে তাদের বিজ্ঞাপনের আয় কমে এসেছে।
তবে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার সফটওয়্যার অ্যাডব্লকারগুলোও বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে কিছু কিছু বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করে। অ্যাডব্লকিংয়ের জন্য জনপ্রিয় সফটওয়্যার ‘অ্যাডব্লক প্লাস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ইয়ো গ্যাম্ব জানান, তারা ৭০টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ নেন এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেওয়া তাদের বিজ্ঞাপনগুলো ব্লক করা হয় না।
ইয়ো তাঁর ব্লগপোস্টে ফেসবুকের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে লিখেছেন, ‘ফেসবুকের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত। কারণ এটা ব্যবহারকারীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে জোর করে বিজ্ঞাপন চাপিয়ে দেওয়া।’
তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অ্যাডব্লকিং সফটওয়্যার নির্মাতাদের সঙ্গে ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনা করা হয়নি দাবি করে ইয়ো লেখেন, ‘ফেসবুক বিজ্ঞাপন বন্ধের এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে চায় না। এটা একটা নতুন বিজনেস মডেল। আমরা জনগণের ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিতে চাই।’