মুম্বাইয়ের পার্সি ক্যাফে
আগেকার বোম্বে এখনকার মুম্বাই। ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের রাজধানী। ফিল্মসিটির কারণে বিখ্যাত মুম্বাইকে ঘিরে রয়েছে সমুদ্র। সিনেমা, সমুদ্র সব মিলে তৈরি হয়েছে মুম্বাইয়ের আলাদা সংস্কৃতি।
মুম্বাইকে বলা হয় অধিবাসীদের শহর। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে জড়ো হন এখানে। সেই সাথে এশিয়া ও ইউরোপের নাগরিকরাও রয়েছেন প্রচুর। তাই এখানে একটা বৈশ্বিক মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।
দক্ষিণ মুম্বাইয়ে রয়েছে বেশ কিছু পার্সি ক্যাফে। মুম্বাইয়ের প্রতিদিনকার আড্ডার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা এই ক্যাফেগুলো। সস্তায় অনেকটা সময় কাটানো যায় এখানে। পুরোনো দিনের ইন্টেরিয়রের কারণে ক্যাফেগুলো দেখে মনে হয় যেন আড্ডার জন্যই তৈরি এসব ক্যাফে। বিংশ শতাব্দীতে মুম্বাইয়ে থাকা পার্সি অর্থাৎ ইরানিরা এসব রেস্তোরাঁ চালু করেন।
ব্রিটানিয়া অ্যান্ড কোম্পানি
মুম্বাইয়ের সবচেয়ে পুরনো ও জনপ্রিয় পার্সি ক্যাফে হচ্ছে ব্রিটানিয়া অ্যান্ড কোম্পানি। এটি খোলা থাকে শুধু দুপুরের খাবারের জন্য। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। রোববার বন্ধ থাকে এটি। এই রেস্তোরাঁর খাবারের মধ্যে বিখ্যাত হলো মুরগি পোলাও। এর সাথে ডেজার্ট হিসেবে থাকে ক্যারামেলের পুডিং। স্বর্গীয় স্বাদের এই খাবার একবার যাঁরা খেয়েছেন তাঁরা ভুলতে পারেননি।
কিয়ানি অ্যান্ড কোম্পানি
মুম্বাইয়ের জেএসএস রোডে অবস্থিত এই রেস্তোরাঁয় খাড়ি বিস্কুটের সাথে খানদানি চায়ের জবাব নেই। বহু বছর আগে থেকে এই রেস্তোরাঁয় চায়ের নিয়মিত খদ্দের রয়েছে। তাদের মতোই এই ক্যাফের টেবিলক্লথ থেকে শুরু করে দেয়ালের পোস্টার এমনকি রেস্তোরাঁর ইন্টেরিয়র সবই রয়ে গেছে আগের মতো। যা পুরনো বোম্বের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে আছে। ট্যাক্সি ড্রাইভার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সবারই এই ক্যাফেতে নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। কলেজপড়ুয়াদের আড্ডায় সব সময় জমজমাট থাকে কিয়ানি ক্যাফে। চেরি কাস্টার্ড এখানকার সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার। এ ছাড়া মাভা কেকও বেশ জনপ্রিয়। ২০০০ সাল থেকে কিয়ানি ক্যাফেটি দেখাশোনা করছেন ফারুক শোকরি। রেস্তোরাঁর প্রতিষ্ঠাতাদের তৃতীয় প্রজন্মের মানুষ তিনি। অর্থাৎ ফারুকের দাদা গোড়াপত্তন করেছিলেন কিয়ানির।
ইয়াজদানি বেকারি
বেকড ফুড আইটেমের জন্য মুম্বাইয়ে স্বনামে খ্যাত ইয়াজদানি বেকারি অ্যান্ড ক্যাফে। হাই সিলিংয়ের এই ক্যাফেতে রয়েছে পুরনো আমলের স্টিলের ভারি চেয়ার এবং দেয়ালজুড়ে রয়েছে পুরনো সব পোস্টার। রেস্তোরাঁর ভেতরে রান্নাঘরে তৈরি করা হয় কেক এবং বিস্কুট। রেস্তোরাঁজুড়ে এর সুবাস ছড়িয়ে থাকে সব সময়। এখানকার খারি বিস্কুট ও আপেল পাই বেশ বিখ্যাত। ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে রেস্তোরাঁটি।
জিমি বয়
ক্যাফের থেকেও বেশি কিছু জিমি বয়। এর খাদ্যসম্ভারে রয়েছে নানা পদের মুরগির রান্না। শাক এবং ঝোল দিয়ে রান্না করা চিকেন ধানশাক, সালি পার এদু ও চিকেন ফারচা এখানকার বিখ্যাত সব খাবার। ডিমের আস্তরণ দিয়ে মুরগির দুই ঠ্যাং নানারকম মসলা দিয়ে ভেজে তৈরি করা হয় চিকেন ফারচা। চটপট ক্ষুধা মেটানোর জন্য খুবই সুস্বাদু এই আইটেম। ১৯২০ সালে মুম্বাইয়ের ব্যাংক স্ট্রিটে ক্যাফেটি স্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে এর নামে দেওয়া হয় জিমি বয়। নাম বদল হলেও এর মালিকানা বদলায়নি।