ইউক্রেন সীমান্তে ‘প্রায় দুই লাখ রুশ সেনা, হাজারো যুদ্ধযান’
ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া প্রায় দুই লাখ সেনা এবং হাজার হাজার যুদ্ধযান মোতায়েন করেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এক ভাষণে জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন—রাশিয়া যেকোনো দিন ‘ইউরোপে বড় ধরনের যুদ্ধ’ শুরু করতে পারে। তিনি রাশিয়ার নাগরিকদের যুদ্ধের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভাষণে বলেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। ফলাফল : কোনো সাড়াশব্দ নেই।’
ভাষণে জেলেনস্কি দাবি করেন—ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার প্রায় দুই লাখ সেনা এবং হাজার হাজার যুদ্ধযান মোতায়েন রয়েছে।
ভাষণের একপর্যায়ে ইউক্রেনীয় থেকে রুশ ভাষায় কথা বলা শুরু করেন জেলেনস্কি। এ সময় তিনি যুদ্ধ প্রত্যাখ্যান করতে রুশদের প্রতি আবেগপূর্ণ স্বরে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কাছে ইউক্রেন সম্পর্কে মিথ্যা বলা হচ্ছে।’
জেলেনস্কি রুশদের উদ্দেশে বলেন, ‘কে (যুদ্ধ) থামাতে পারে? জনগণ। আর, আমি নিশ্চিত, সে জনগণ আপনাদের মধ্যেই রয়েছে।’
তবে, ইউক্রেনের নেতা এও বলেন—তাঁর দেশ রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। জেলেনস্কি জোর গলায় বলেন, ‘যদি তারা (রাশিয়া) হামলা করে, যদি তারা আমাদের দেশ, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের জীবন, আমাদের শিশুদের জীবন নেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা নিজেদের রক্ষা করব।’
এ ছাড়া পুতিনকে ইঙ্গিত করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনি আক্রমণ করলে আমাদের মুখ দেখতে পাবেন, পিঠ নয়।’
এদিকে, ইউক্রেনের দুটি বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে পুতিন রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার সেনারা ইউক্রেন সীমান্তের কাছাকাছি চলে এসেছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়া বলছে—পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলো তাদের কাছে সামরিক সহায়তা চেয়েছিল।
একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে—রাশিয়া বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, তারা পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী পুরো আকাশসীমা কার্যত বন্ধ করে দিচ্ছে।
এদিকে, চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে আজ সকালে জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
ইউক্রেন এরই মধ্যে আজ থেকে ৩০ দিনের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এবং রাশিয়ায় বসবাসরত লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিককে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে।
ইউক্রেনে জরুরি অবস্থা জারির ফলে দেশটির জনসাধারণের ব্যক্তিগত নথিপত্র পরীক্ষা করা যাবে। এ ছাড়া জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত বিল পাসের মাধ্যমে ইউক্রেন সরকার কারফিউ জারিসহ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা পেয়েছে।