ক্ষুধা মেটাতে গ্রামাঞ্চল থেকে মোগাদিসুতে মানুষের ঢল
পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম খরার কারণে খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধা থেকে বাঁচতে শহরের দিকে ছুটে যাচ্ছে। এর ফলে রাজধানী মোগাদিসুর উপকণ্ঠে নির্মিত অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কোভিড মহামারির মধ্যে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি এবং দুর্বল স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থার মুখে পড়েছে বাস্তুচ্যুত মানুষ।
সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, খরা থেকে পালিয়ে আসা সোমালি গ্রামবাসী প্রতিদিন রাজধানী মোগাদিসুর উপকণ্ঠে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য নির্ধারিত ক্যাম্পের দিকে আসছে।
নাজাহ ক্যাম্পে পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সি চার সন্তানের মা মুহুবো অ্যাডাম তাঁর পরিবারের জন্য যেটুকু খাবার আছে, তা-ই রান্না করছেন। প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে লোয়ার শাবেলে ছিল তাঁর গ্রাম। সেখান থেকে পালিয়ে গত সপ্তাহে সপরিবারে ক্যাম্পে এসে পৌঁছান তিনি।
মুহুবো অ্যাডাম জানান, তাঁরা গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। কারণ, গ্রামে দুই মৌসুমে বৃষ্টি হয়নি। খরার কারণে তাঁদের গবাদিপশু ও খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। অ্যাডাম জানান, ক্যাম্পে পৌঁছানোর জন্য তাঁদের সারা দিন হাঁটতে হয়েছে।
কিন্তু, জনাকীর্ণ আশ্রয় শিবিরের পরিস্থিতিও ভালো নয়। করোনভাইরাসের মহামারড সত্ত্বেও কেউ মাস্ক পরে না। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই খারাপ।
স্থানীয় মার্টিনো হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবদিরিজাক ইউসুফ বলেন, মানুষের ঢল শহরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। কেননা, মহামারির আগেও এ স্বাস্থ্য পরিষেবা ছিল দুর্বল।
ডা. ইউসুফ বলেন, খরা পরিস্থিতি এরই মধ্যে বিদ্যমান কোভিড সমস্যার ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অসুস্থতা ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
সরকার এবং জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, সোমালিয়ায় লাখ লাখ মানুষের জরুরি খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন।
কর্মকর্তারা বলছেন, মোগাদিসুর কাছে শিবিরে বসবাসকারী হাজার হাজার শরণার্থী দুর্বল পয়ঃব্যবস্থা, যানজট এবং নোংরা পানির কারণে রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।