পুতিন ক্ষমতায় থাকবেন কি না, তা বাইডেন বলার কেউ নন : রাশিয়া
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ক্ষমতায় থাকতে পারেন না’—রাশিয়ার জনগণের উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে রুশ সরকার। ক্রেমলিন বলেছে—প্রেসিডেন্ট কে থাকবেন, সে সিদ্ধান্ত নেবে রাশিয়ার জনগণ। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
এর আগে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে ইউক্রেনের শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জো বাইডেন বলেন, পুতিন ‘ক্ষমতায় থাকতে পারেন না।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রে পেসকভ রয়টার্সকে বলেন, ‘সে সিদ্ধান্ত বাইডেন নেওয়ার কেউ নন। রুশ প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করেছেন রাশিয়ার জনগণ।’
এদিকে, পুতিন সম্পর্কে জো বাইডনের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, জো বাইডেন রাশিয়ার শাসনক্ষমতা পরিবর্তনের কথা বলেননি। বাইডেন বোঝাতে চেয়েছেন, পুতিনকে তাঁর প্রতিবেশী দেশ বা অঞ্চলের ওপর ক্ষমতা দেখাতে দেওয়া যাবে না।
পোল্যান্ডে জো বাইডেন
জো বাইডেন গতকাল শনিবার পোল্যান্ডে ঘোষণা করেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদের প্রতিরক্ষা আগামী প্রজন্মের জন্য বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রয়্যাল ক্যাসেলে এক বক্তৃতায় জো বাইডেন বলেন, ‘এ মুহূর্তের পরীক্ষা সর্বকালের পরীক্ষা।’
রয়্যাল ক্যাসেল হল ওয়ারশ’র একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরে ১৯৭০-৮০-এর দশকে করে তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ ‘প্রাচীনতম মানবিক প্ররোচনার একটি উদাহরণ, যাকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা এবং সে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা মেটানোর জন্য নৃশংস শক্তি প্রদর্শন ও বিভ্রান্তির সঙ্গে তুলনা করা চলে।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘এটি (ইউক্রেনে যুদ্ধ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রতিষ্ঠিত সব নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।’
ইউক্রেনীয় শরণার্থীসহ প্রায় তিন হাজার মানুষ লাইভ স্ট্রিমে বাইডেনের ওই বক্তব্য শুনতে দুর্গের বাইরে জড়ো হন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে, এবং দীর্ঘ পথ চলার জন্য এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিষয়ে আলোচনা করতে জো বাইডেন শনিবার ওয়ারশ-তে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে দুদাসহ দেশটির অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন।
এদিকে, সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা বলছে—আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে সামরিক আগ্রাসনটিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দিকে নিয়ে গিয়েছে।
এর আগে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে জো বাইডেন বলেন, ‘আপনাদের স্বাধীনতা, আমাদের স্বাধীনতা।’
আর, দুদা বলেন, ‘পোল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটি সমৃদ্ধির পথে’ এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধটি ন্যাটোর একতার গুরুত্ব প্রমাণ করে। পোল্যান্ড ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশ।
মানবিক সহায়তা বিষয়ে আলাপ করতে শনিবার ওয়ারশস’র একটি স্টেডিয়ামে শরণার্থীদের পরিদর্শনের সময় জো বাইডেনের সঙ্গে ওয়ারশ’র মেয়র রাফাল রাজাকোস্কি এবং পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এক লাখ শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দিতে অঙ্গীকার করেন জো বাইডেন।