শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সুইমিংপুলে বিক্ষোভকারীদের উল্লাস
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সরকারি বাসভবন ছেড়ে পালালে তাঁর সুইমিং পুলে নেমে উল্লাসে মেতে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। দেশটিতে কয়েক মাস ধরে চলা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবি করে আসছিলেন। এরপর আজ বিক্ষোভকারীরা বাসভবনে ঢুকে পড়লে সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি। তবে, কীভাবে তিনি পালিয়েছেন, সে তথ্য এখনো জানা যায়নি। খবব বিবিসি’র।
দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগের উচ্চপর্যায়ের এক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে রাজাপাকসের পালিয়ে যাওয়ার তথ্য জানা যায়। এনডিটিভি ও বিবিসিও এই তথ্য প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভঙ্গুর অর্থনীতি এবং তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ বৃদ্ধি পাচ্ছিল দিন দিন। সপ্তাহখানেক হলো জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দেয়। আজ শনিবার টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দিকে যাচ্ছিল। তারা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিচ্ছিল।
সরকারের প্রতিরক্ষা বিভাগের ওই সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে নিরাপত্তাকর্মীরা। কিন্তু, তাদের রোধ করা যায়নি। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ে।
জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা শ্রীলঙ্কার মানুষ। সংকট নিরসনে ব্যর্থতার অভিযোগে দেশটিতে সরকারের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ–প্রতিবাদ। আর, উত্তাল বিক্ষোভ ঠেকাতে দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজধানী কলম্বোয় গতকাল শুক্রবার জারি করা হয় কারফিউ।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বলে আর কিছু নেই। এ কারণে দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কা খাবার, ওষুধ, জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানি পণ্যের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না।
বর্তমান এই দুরাবস্থার জন্য দেশটির অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দায়ী করছেন। গত মার্চ থেকেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরে।